আবনা ডেস্কঃ ভারত নিয়ন্ত্রিত জুম্মু ও কাশ্মীরে পটকাকে গ্রেনেড মনে করে একদল বিক্ষোভকারীর ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছে ভারতীয় সেনারা।
এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তানভির আহমেদ পালা নামে এক কাশ্মীরি তরুণ নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম ওয়ানি নামের আরও একজন।
শুক্রবার স্বাধীনতাকামী সিনিয়র নেতাদের ডাকে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে বদগাম জেলার বীরওয়াহ শহরে বিক্ষোভকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বিক্ষোভকালে ভারতীয় সেনারা টহল দিতে শুরু করলে তাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়।
এ সময় তানভির একটি পটকা ছুঁড়ে মারেন। একে গ্রেনেড মনে করে বিক্ষোভকারীদের নিশানা করে সরাসরি গুলিবর্ষণ করে সেনারা।
এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তানভির। আরেক গুলিবিদ্ধ ইব্রাহিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরে তাকে শ্রীনগরের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশের দেয়া এক বিবৃতি বলা হয়েছে, দুষ্কৃতিকারীদের (বিক্ষোভকারীরা) একজন সেনাদের লক্ষ্য করে একটি পটকা ছুঁড়ে মারলে এর শব্দকে গ্রেনেড বিস্ফোরণ মনে করে জবাবে সেনারা গুলিবর্ষণ করে।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরে সম্প্রতি কয়েক ডজন সাধারণ মানুষকে হত্যা ও বহু রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শ্রীনগরে অবস্থিত জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গ্রুপের কার্যালয়মুখী পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতাকামীরা।
এই কর্মসূচিকে ঘিরে দলের শ্রীনগরের মূল শহরের একাংশে কারফিউ জারি করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সেখানার স্কুল, কলেজ, দোকান, সরকারি পরিবহণ এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কাশ্মীরজুড়ে রেল চলাচলও বাতিল করা হয়েছে।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের দখলের কারণে কাশ্মীর বিভক্ত হয়ে পড়েছে। উভয় দেশই কাশ্মীরের পুরো অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে আসছে। তবে কাশ্মীরিরা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।
এই স্বাধীনতা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে ৫ লাখ সেনা মোতায়ন করে রেখেছে ভারত।তাদের সংঘর্ষের ঘটনায় হাজার হাজার কাশ্মীরি নিহত হয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ।
সর্বশেষ গত বছরের ৮ জুলাই কাশ্মীরের তরুণ বিদ্রোহী কমান্ডার বোরহান ওয়ানি ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিমালয়ের এই উপত্যকাটি জুড়ে গণবিস্ফোরণের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র: এএফপি ও ইন্ডিয়া টাইমস