আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গত জুন মাসের প্রথম দিকে ইরানের মজলিস-এ শুরায়ে ইসলামিতে দায়েশ সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় আটক জনৈক সন্ত্রাসীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে ইরানি গণমাধ্যম।
সাক্ষাৎকারটির বাংলা অনুবাদ আবনা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হল।
প্রশ্ন: আইএসআইএস-এর সাথে পরিচয় কিভাবে?
-প্রায় ৩ বছর ধরে আমার ভাই সিরিয়াতে দায়েশের (আইএসআইএস) সাথে সম্পৃক্ত।তার মাধ্যমে দায়েশের সাথে পরিচয়।
প্রশ্ন: তেহরানে হামলা সম্পর্কে বলুন।
-দায়েশিরা আগেই তেহরানে হামলার পরিকল্পনা করেছিল এবং আমার কাছে সহযোগিতা চেয়েছিল।
প্রশ্ন: কি ধরনের সহযোগিতা?
-তাদেরকে ইরান ও তেহরানে প্রবেশ করতে সহযোগিতা করেছি এবং তারা কোন কিছু চাইলে তা সংগ্রহ করে দিতাম।
প্রশ্ন: কি ধরনের সরঞ্জাম তাদেরকে সরবরাহ করেছেন?
-তাদের একজনকে সাথে নিয়ে অস্ত্রের সাপ্লাই গ্রহণ করেছি।আর এ অভিযানে তারা যা কিছু চেয়েছে আমি সেগুলো সংগ্রহ করেছি।
প্রশ্ন: আপনারা যে কাজে জড়িত ছিলেন তার প্রতি কি আপনাদের বিশ্বাস ছিল?
-হ্যাঁ, কিন্তু এখন ঐ কাজগুলোর প্রতি কোন বিশ্বাস নেই।
প্রশ্ন: কি কারণে এখন ঐ কাজগুলোর বিষয়ে অনুতপ্ত?
-দায়েশিরা বলতো, সাধারণ মানুষ তাদের টার্গেট নয়, কিন্তু তারা সাধারণ মানুষেরও ক্ষতি করেছে।
প্রশ্ন: আপনার সাথেও কি আত্মঘাতী এক্সপ্লোসিভ বেল্ট ছিল?
-হ্যাঁ, অভিযানের আগে, আমার বাড়ি নিরাপদ নয়, তাই তাদের সাথে তাদের গোপন আস্তানায় আশ্রয় নেওয়ার কথা আমাকে বলেছিল।আর ওখানে সবাই একসাথে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই।একটি রাত একত্রে কাটানোর পর আমরা আমাদের আস্তানা পরিবর্তন করি।
প্রশ্ন: প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হওয়ার সময় দায়েশ কি পাঠ করে?
-তারা বলে: ‘এই মর্মে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছি যে, দায়েশ প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির নির্দেশ অমান্য করবো না’।
প্রশ্ন: অনেকের মনে এ প্রশ্নটি রয়েছে, আপনাদের বিবেক বলে কি কিছু নেই?
-দায়েশের খাতায় নাম লেখানোর পর আপনি যাকে কাফের বলে জ্ঞান করবেন, তাকে হত্যা করা খু্বই সহজ।
প্রশ্ন: আপনার পরিবার কি জানতো যে আপনি দায়েশের সদস্য?
-না, তারা জানতো না।
প্রশ্ন: তাহলে কিভাবে আপনি আপনার ওসিয়তনামায় আপনার পরিবারের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘ফেরদৌস-এ আ’লাতে আমাদের সাক্ষাৎ হবে’?
-ঐ ওসিয়তনামা আমাদের ভগ্নিপতিকে দিয়ে বলেছিলাম যেন আমার মৃত্যুর পরে তা পড়ে।
প্রশ্ন: সত্যিই আপনি বিশ্বাস করতেন যে, বেহেশতে যাবেন?
(কোন উত্তর দেননি)
প্রশ্ন: আপনি কখন আটক হন?
-অভিযানের ২ দিন পর।
প্রশ্ন: আপনার ভাইও কি ঐ অভিযানে অংশ নিয়েছিল, তার পরিণতি কি হয়েছে?
-নিরাপরাধ মানুষগুলোকে হত্যা করে সে নিজেও নিহত হয়েছে।
প্রশ্ন: ঐ অভিযানের মুল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলুন?
-দায়েশের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাদের অবাধ্যদেরকে হত্যা করা।
প্রশ্ন: দায়েশ সম্পর্কে সুন্নি আলেমদের অভিমত কি?
-ওলামা, দায়েশকে তাকফিরি জ্ঞান করেন এবং কোন অবস্থাতেই তাদেরকে সমর্থন করেননা।
প্রশ্ন: সুন্নি আলেমদের সম্পর্কে দায়েশের অভিমত কি?
-দায়েশ, ইরানের সুন্নি সম্প্রদায়কে সমর্থন করে না।
প্রশ্ন: যদি দায়েশ প্রধানদের সাথে কথা বলার সুযোগ পান তবে তাকে কি পরামর্শ দেবেন?
-তারা এমন একটি লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে যাতে পৌঁছুনো কখনই সম্ভব নয়।#