বাঙ্গালী
Friday 22nd of November 2024
0
نفر 0

ইমাম হোসাইন (আ.)-এর জন্ম সংক্রান্ত একটি স্বপ্নের ব্যাখ্যা

সাইয়্যেদুশ শুহাদা হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) চতুর্থ হিজরী ৪ সনে শাবান মাসের ৫ম রাতে জন্মগ্রহণ করেন। এক রেওয়ায়েত অনুসারে ৩রা শাবান তিনি জন্ম নেন । কারো কারো মতে ৩য় হিজরীর রবিউল আওয়াল মাসের শেষ দিনে তার জন্ম হয় । তার জন্ম তারিখের ব্যাপারে ভিন্নতর রেওয়ায়েতও রয়েছে।

হযরত হোসাইন (আ.) এর জন্মগ্রহণের পর এক হাজার ফেরেশতা সাথে নিয়ে হযরত জিব্রাইল (আ.) মোবারকবাদ জানানোর জন্য রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হন। হযরত ফাতেমা (সা.আ.) নবজাতক সন্তানকে পিতার কাছে নিয়ে আসেন। নবী করিম (সা.) তাকে দেখে অত্যন্ত খুশী হন এবং তার নাম রাখেন ‘হোসাইন’।

ইবনে আব্বাস ‘তাবাকাত’ কিতাবে আব্দুল্লাহ ইবনে বাকার ইবনে হাবীব সাহমী সূত্রে হাতেম ইবনে সানআ হতে বর্ণনা করেন যে, আব্বাস ইবনে আব্দুল মোত্তালিবের স্ত্রী উম্মুল ফজল বলেন- হোসাইন (আ.)এর জন্মের পূর্বে এক রাতে স্বপ্নে দেখলাম পয়গাম্বর (সা.) এর শরীর হতে এক টুকরা গোশত পৃথক হয়ে আমার কোলে এসে পড়ল । এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা সারাসরি রাসূল (সা.) এর কাছে জানতে চাইলাম । তিনি বললেন, তোমার স্বপ্ন যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে অচিরেই আমার কন্যা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিবে এবং আমি তাকে দুধ পান করানোর জন্য তোমার কছে দিব ।

কিছুদিন পর হযরত ফাতেমার (সা.আ.) ঘরে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয় । দুগ্ধপানের জন্য সেই শিশু চলে আসে আমার কোলে । একদিন তাকে রাসূল (সা.) এর খেদমতে নিয়ে গেলাম । তিনি নবজাতককে নিজের হাটুর উপর বসালেন এবং একের পর এক চুমু দিতে লাগলেন । এ সময় তার এক ফোটা পেশাব রাসূলে খোদার জামায় পড়ে গেল । তখন খুব জোরে আমি নবী (সা.) এর কোল থেকে তাকে ছিনিয়ে নিলাম । যার ফলে সে কেদে উঠল । রাসূল (সা.) রাগান্বিত হয়ে আমাকে বললেন- “হে উম্মুল ফজল! আমার জামা ধোয়া হবে; কিন্তু তুমি আমার সন্তানকেই কষ্ট দিয়েছো ।” এরপর আমি হোসাইন (আ.) কে ওখানে রেখে পানি আনার জন্য বাইরে গেলাম । ফিরে এসে দেখি, রাসূল (সা.) কাদছেন । জিজ্ঞেস করলাম- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কেন কাদছেন ? তিনি বললেন- একটু আগে ফেরেশতা জিব্রাইল এসে আমাকে বলে গেল যে, আমার একদল পথভ্রষ্ট উম্মত আমার এই সন্তানকে হত্যা করবে । মুহাদ্দেসগণ বর্ণনা করছেন যে, হযরত হোসাইন (আ.) এর বয়স যখন ১ বছর, তখন ১২ জন ফেরেশতা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.) এর কাছে অবতীর্ণ হন যাদের আকৃতি ছিল ভিন্ন ধরনের এবং চেহারা ছিল রক্তিম । তাদের পাখাগুলো ছিল উন্মুক্ত । তারা বলল হে মুহাম্মদ কাবিলের পক্ষ থেকে হাবিলের উপর যে জুলুম হয়ছে ঠিক একই জুলুম আপনার সন্তানের উপর আপতিত হবে । এতে হাবিলকে যে সওয়াব দেয়া হয়েছে, সে রকম সওয়াব তাকেও দেয়া হবে । আর তার হত্যাকরীদের শাস্তি ও আযাব হবে কাবিলের শাস্তির মত । ঐ সময় আসমানসমূহে আল্লাহর কোন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা ছিলেন না । বরং সবাই রাসূল (সা.) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে হোসাইন (আ.) এর নিহত হওয়ার ব্যাপারে শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন-সঙ্গে ঐ শাহাদতের বিনিময়ে মহান আল্লাহ যে সওয়াব ও প্রতিদান নির্ধারণ করেছেন, সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন । একইভাবে হযরত হোসাইন (আ.) এর কবরের মাটি এনে রাসূল (সা.) কে দেখান ।

এ অবস্থার মধ্যেই নবী (সা.)বলেন- “আল্লাহ তুমি ঐ ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত কর, যে আমার সন্তান হোসাইনকে অপমানিত করবে । তুমি ঐ লোককে হত্যা কর, যে আমার হোসাইনে হত্যা করবে । আর তার হত্যাকারীকে তার উদ্দেশ্য পূরণ করতে দিওনা।”#আল হাসানাইন

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

শ্রেষ্ঠ নারী হযরত ফাতিমাতুয ...
ইমাম হাসান (আ.) এর শাহাদাত
নবী রাসূল প্রেরণের প্রয়োজনীয়তা
Apabila ada sebagian hukum Islam yang nampaknya bertentangan serta kontradiktif dengan ...
আবতার কে বা কা’রা?
ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কতিপয় খুতবা ও ...
ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মহান শাহাদাতের ...
ইহুদি ধর্ম
দুই নামাজ একসাথে পড়ার শরয়ী দললি
আমীরুল মু’মিনীন হযরত আলী (আ.) এর ...

 
user comment