বিদেশের ইরানি মিশন এবং প্রবাসী ইরানিরা ছাড়াও ইরানের প্রতিটি শহর, গ্রাম ও বন্দরে এ মহান বিজয়-বার্ষিকীর নানা অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রায় শরিক হয়েছেন সর্বস্তরের জনগণ।
আবনা ডেস্কঃ আজ ইরানের কিংবদন্তীতুল্য ইসলামী বিপ্লবের ৩৯তম বিজয়-বার্ষিকী। সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষ আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে এ দিন।
বিদেশের ইরানি মিশন এবং প্রবাসী ইরানিরা ছাড়াও ইরানের প্রতিটি শহর, গ্রাম ও বন্দরে এ মহান বিজয়-বার্ষিকীর নানা অনুষ্ঠান ও শোভাযাত্রায় শরিক হয়েছেন সর্বস্তরের জনগণ।
রাজধানী তেহরানসহ ইরানের শহর আর গ্রামগুলোর প্রধান সড়ক ও চত্বরগুলো পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। অনেকের হাতেই রয়েছে কলেমায়ে তাইয়্যেবার প্রতীক খচিত ইরানের বর্ণাঢ্য জাতীয় পতাকা, কিংবা মার্কিন ও ইসরাইলি আধিপত্যের ধ্বংস কামনার শ্লোগানসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর আঁতে ঘা দেয়া নানা শ্লোগানে উৎকীর্ণ ব্যানার বা প্ল্যাকার্ড। ইসলামী ও জাতীয় ঐক্যের চেতনার গৌরবময় ঔজ্জ্বল্যের এমন বিশাল ও ব্যাপক প্রকাশ গোটা বিশ্বেই নজিরবিহীন।
আধুনিক যুগে রাজনীতিসহ জীবনের প্রধান ক্ষেত্রগুলোতে ধর্ম ও এমনকি ইসলামকে নিয়েও যখন ব্যাপক হতাশা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল তখনই ইরানে সফল হয় ইসলামী বিপ্লব ও গড়ে তোলা হয় আধুনিক যুগের প্রথম ও একমাত্র খাঁটি ইসলামী রাষ্ট্র।
আধুনিক যুগে ধর্মহীন কথিত সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা আর পশ্চিমা পুঁজিবাদ ও শোষণের নাগপাশে বন্দি কথিত লিবারেল গণতন্ত্রের ব্যর্থতার প্রেক্ষাপটে জনগণের অংশগ্রহণ-ভিত্তিক ইসলামী শাসন ব্যবস্থার আবির্ভাব বিশ্ব-ইতিহাসে এনেছে এক বড় যুগান্তর।
সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী প্রকৃত প্রতিরোধ ও আসল স্বাধীনতা কাকে বলে তা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে ইরানের এই মহাবিপ্লব। খাঁটি ইসলাম ও জাতীয় গৌরবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ইরানি জাতি গত ৩৯ বছরে শত্রুদের বহু ষড়যন্ত্র বানচাল করেছে ইস্পাত-কঠিন জাতীয় ঐক্যের সুবাদে। সামরিক শক্তি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রেই বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসছে ইরান। ফলে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে শত্রুদের দীর্ঘকালের নানা ব্যবস্থা, হিসাব-কিতাব ও সমীকরণ। জোরদার হয়েছে ইসলামী বিপ্লব ও রাষ্ট্র-ব্যবস্থার মৌলিক নানা দিক এবং ভিত্তিগুলো।
ইসলামী ইরানের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি এত উন্নত যে তা শত্রুদেরও স্বীকৃতি বা প্রশংসা অর্জন করছে। ইরান যে আজ সব ক্ষেত্রেই অগ্রসর ও উন্নত হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবের মূল্যবোধকে সাথে নিয়ে তাও স্বীকার করছেন বিশ্বের নামকরা বিশ্লেষকরা। আসলে এটা স্পষ্ট মহাসত্যের বাস্তবতাগুলোকে চিরকাল ঢেকে রাখা যায় না।
ইসলামী রাজনৈতিক ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার যে মডেল ইরান বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছে তার জুলুম-বিরোধী কার্যকর শক্তিমত্তা, স্বাধীনতা, অদম্যতা ও দুর্বার অগ্রযাত্রা এবং অপরাজেয় নানা শক্তি এই ব্যবস্থাকে অদূর ভবিষ্যতে সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেলে পরিণত করবে। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রভাবে গত কয়েক দশকে নানা অঞ্চলে ইসলামী জাগরণ ও মুক্তিকামী প্রতিরোধ জোরদারের বিষয়টিও এরই আলোকে সুস্পষ্ট। তাই ইসলামী ইরান যে আজ এক বড় বিশ্ব-শক্তি তা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশ্লেষক ও গবেষকরা।
দাম্ভিক শক্তিগুলোর সব ধরনের অবৈধ দাবি ও স্বার্থকে উপেক্ষা এবং জালিম শক্তিগুলোর বিরোধিতায় ঐতিহ্য সৃষ্টি করে গোটা বিশ্বের জুলুমবাজদের হৃদয়ে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে ইরানের ইসলামী বিপ্লব। তাই এ মহাবিপ্লবের বিজয়-বার্ষিকী আজ ইরানি জাতি ছাড়াও সত্যিকার অর্থেই বিশ্বের সব মহাদেশের মুক্তিকামী জাতিগুলোর অন্যতম প্রধান ঈদ-উৎসবে পরিণত হয়েছে। #