হে আল্লাহ্! আপনি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর (পবিত্র) বংশধরগণের ওপর দরূদ ও সালাত প্রেরণ করুন। যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি তখন আমার প্রার্থনা শুনুন এবং যখন আপনাকে আহ্বান করি তখন আমার আহ্বান শুনুন। যখন আপনার কাছে আমি নিভৃতে প্রার্থনা করি তখন আমার দিকে এগিয়ে আসুন। আমি আপনার কাছে ছুটে এসেছি এবং আপনার কাছে একান্ত বাধ্য অবস্থায় বিনয়াবনতভাবে সওয়াবের প্রত্যাশা নিয়ে আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আর আমার মনে যা আছে তা আপনি জানেন। আপনি আমার মনস্কামনা সম্পর্কে জ্ঞাত এবং আমার অন্তঃকরণের সাথে পরিচিত। আমার গতি-স্থিতি কোন কিছুই আপনার কাছে গোপন নয়। আর আমি আমার কণ্ঠের মাধ্যমে যা প্রকাশ করতে চাই, আমার যে আকাঙ্ক্ষিত বস্তুর কথা আমি ঠোঁটে ব্যক্ত করি এবং আমার যে পরিণতি আমি প্রত্যাশা করি তাও আপনার কাছে গোপন নয়।
হে আমার মাওলা! আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার গোপন ও প্রকাশ্য যা কিছু আছে সে সব ক্ষেত্রে আপনি যা কিছু নির্ধারণ করেছেন তা বলবৎ রয়েছে। আর আপনার হাতেই রয়েছে আমার সচ্ছলতা ও দারিদ্র্য, উপকার ও অপকার- অন্য কারো হাতে তা নেই। হে আমার ইলাহ্! যদি আপনি আমাকে বঞ্চিত করেন তাহলে কে আমাকে রিজিক দেবে? আপনি যদি আমাকে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকেন তাহলে কে আমাকে সাহায্য করবে? হে আমার ইলাহ্! আমার ওপর আপনার ক্রোধ ও অসন্তুষ্টি অবতীর্ণ হওয়া থেকে আপনার কাছে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আমার ইলাহ্! আমি যদি আপনার রহমত প্রাপ্তির অযোগ্য হই তাহলে আপনি আপনার প্রাচুর্যের বদৌলতে আমার ওপর অসীম দয়া ও অবারিত দান করার যোগ্য।
হে আমার ইলাহ্! আমি যেন আপনার সামনে দণ্ডায়মান এবং আপনার ওপর আমার নির্ভরতা (তাওয়াক্কুল) আমার প্রাণের ওপর সুশীতল ছায়া মেলে ধরেছে। অতঃপর আপনি যে বিষয়ের উপযুক্ত তা আঞ্জাম দিয়েছেন (বলেছেন) এবং আপনার ক্ষমা দিয়ে আমাকে ঢেকে দিয়েছেন।
হে আমার ইলাহ্! আপনি যদি আমাকে ক্ষমা করেন তাহলে আপনার চেয়ে এ ব্যাপারে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আর কে আছে? আর যদি আমার অন্তিম মুহূর্ত ঘনিয়ে আসে এবং আমার কর্ম আমাকে আপনার কাছাকাছি বা ঘনিষ্ঠ না করে তাহলে পাপ কাজের ব্যাপারে আমার স্বীকারোক্তিকে আপনার কাছে আমার উসিলা বা মাধ্যম হিসেবে দাঁড় করিয়েছি। হে আমার ইলাহ্! আমি আমার নাফসের ওপর দেখার ক্ষেত্রে জুলুম করেছি (তথা কামনা-বাসনাকে সীমালঙ্ঘনের সুযোগ দিয়েছি)। তাই আপনি যদি তাকে ক্ষমা না করেন তাহলে তার জন্য আক্ষেপ!
হে আমার ইলাহ্! আমার জীবদ্দশায় যেমন আমার ওপর আপনার সদাচরণ, দয়া ও উপকার অব্যাহত আছে তেমনি আমার মৃত্যুর সময় আমা থেকে আপনার সদাচরণ, দয়া ও উপকার ছিন্ন করবেন না। হে আমার ইলাহ্! আমার মৃত্যুর পর আমার প্রতি আপনার সুদৃষ্টি থেকে আমি কিভাবে নিরাশ হব অথচ আমার জীবদ্দশায় (আপনি) আমাকে সুন্দর ছাড়া আর কিছুই প্রদান করেন নি? হে আমার ইলাহ্! আপনি যে বিষয়ের উপযুক্ত কেবল সে বিষয়টাই আমার জন্য পরিচালনা করুন। ঐ পাপী যার অজ্ঞতা তাকে আবৃত করে রেখেছে, তার ওপর আপনি যেভাবে অনুগ্রহ করেন সেরূপ অনুগ্রহের মাধ্যমে আপনি আমার পাপগুলো ঢেকেছিলেন অথচ আমি আখেরাতে দুনিয়ার চেয়েও সে সব পাপ গোপন রাখার ব্যাপারে আপনার কাছে বেশি মুখাপেক্ষী। যেহেতু দুনিয়ায় আপনি আমার পাপগুলোকে আপনার কোন সৎকর্মশীল বান্দার কাছে প্রকাশ করেন নি, তাই সকল চোখের সামনে আমাকে কিয়ামত দিবসে অপমানিত করবেন না।
হে আমার ইলাহ্! আপনার দান আমার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং আপনার ক্ষমা আমার আমলের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। হে আমার ইলাহ্! যেদিন আপনি আপনার বান্দাদের মাঝে বিচার করবেন সেদিন আপনার সাক্ষাত দিয়ে আমাকে আনন্দিত করুন। হে আমার ইলাহ! আপনার কাছে আমার অজুহাত ঐ ব্যক্তির অজুহাত প্রদর্শনের অনুরূপ যে তার অজুহাত গৃহীত হওয়া থেকে অমুখাপেক্ষী হতে পারেনি। অতএব, হে ঐ সত্তা, যাদের কাছে পাপীরা অজুহাত প্রদর্শন করে থাকে (আপনি) তাদের (সবার) চেয়ে দয়ালু! আমার অজুহাত কবুল করুন। হে আমার ইলাহ্! আমার মনস্কামনা প্রত্যাখ্যান করবেন না। আমার লোভ তথা আপনার দয়া ও অবারিত দান পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করবেন না। আপনার কাছে আমার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ছিন্ন করবেন না। হে আমার ইলাহ্! আপনি যদি আমাকে দীন-হীন করার ইচ্ছা করতেন তাহলে আমাকে হেদায়েত করতেন না। আর আপনি যদি আমার অপমান চাইতেন তাহলে আমাকে ক্ষমা করতেন না।
হে আমার ইলাহ্! আমি ধারণা করছি না যে, আপনি আমাকে আমার এমন এক মনস্কামনা পূরণ করার ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত করবেন যা আপনার কাছ থেকে অন্বেষণ করার জন্য আমি আমার পুরো জীবনটাই শেষ করে ফেলেছি। হে আমার ইলাহ্! আপনি যেমন ভালোবাসেন ঠিক তেমনি সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য যা সর্বদা, চিরকাল এবং অনাদি-অনন্তকাল ধরে বৃদ্ধি পাবে এবং কখনই নিশ্চিহ্ন হবে না।
হে আমার ইলাহ্! আপনি যদি আমাকে আমার অপরাধের জন্য পাকড়াও করেন তাহলে আমি আপনার ক্ষমাকে আঁকড়ে ধরব। আপনি যদি আমাকে আমার পাপের কারণে পাকড়াও করেন তাহলে আমি আপনার ক্ষমার উসিলায় আপনাকে আঁকড়ে ধরব। আর আপনি যদি আমাকে জাহান্নামে প্রবেশ করান তাহলে আমি জাহান্নামের অধিবাসীদের কাছে ঘোষণা করছি যে, নিশ্চয়ই আমি আপনাকেই ভালোবাসি।
হে আমার ইলাহ্! আপনার আনুগত্যের ক্ষেত্রে আমার আমল যদি ক্ষুদ্র হয় তাহলে আপনাকে পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার আশা বড় হবে। হে আমার ইলাহ্! কিভাবে আমি আপনার কাছে বঞ্চিত হব অথচ দয়া ও মুক্তিপ্রাপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আপনার মহানুভবতা সম্বন্ধে আমার সুধারণা জন্মেছে?
হে আমার ইলাহ্! আমি আমার সমগ্র জীবনকে আপনার প্রতি অমনোযোগিতার অনলে ধ্বংস করে ফেলেছি। আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার যন্ত্রণায় আমার যৌবনকে বার্ধক্যে রূপান্তরিত করে ফেলেছি। হে আমার ইলাহ্! আপনার প্রতি আমার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ প্রদর্শনের এবং আপনার অসন্তুষ্টির পথে আমার দৃঢ়ভাবে অবস্থানের দিনগুলোতে আমি জাগ্রত হইনি।
হে আমার ইলাহ্! আমি আপনার বান্দা এবং আপনার বান্দার সন্তান যে আপনার সামনে দণ্ডায়মান এবং আপনার দয়া ও মহানুভবতার উসিলায় আপনার দ্বারস্থ হয়েছি এবং আপনার কাছে তাওয়াসসুল করছি তথা আপনার দয়া ও মহানুভবতাকেই উসিলা হিসেবে পেশ করছি। হে আমার ইলাহ্! আমি এমন এক বান্দা যে আপনার দৃষ্টিতে আমার লজ্জাহীনতার দরুন যা দিয়ে আপনার বিরোধিতা করেছি তা থেকে নিজেকে এখন পৃথক বলে গণ্য করছি। আমি আপনার কাছ থেকে ক্ষমা অন্বেষণ করছি। কারণ ক্ষমা হচ্ছে আপনার মহানুভবতারই একটি বৈশিষ্ট্য। হে আমার ইলাহ্! আমার কোন শক্তি ছিল না যাতে করে আমি তা দিয়ে আপনার বিরুদ্ধাচরণ থেকে বিরত থাকতে পারি, তবে সেই সময় ছাড়া যে সময় আপনি আমাকে আপনার ভালোবাসায় এবং আপনার ব্যাপারে অমনোযোগী থাকার দূষণ থেকে আমার অন্তঃকরণকে পবিত্র করার জন্য জাগ্রত করেছেন। আর আপনি যেমন আমার অস্তিত্বের ইচ্ছা করেছিলেন তদ্রূপ আমি অস্তিত্ব লাভ করেছি। তাই আমাকে আপনার দয়ার মাঝে প্রবেশ করানো এবং স্থান দেয়ার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি।
হে আমার ইলাহ্! আমার দিকে আপনি দৃষ্টি দিন ঐ ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দানের মতো যাকে আপনি আহ্বান করেছেন; অতঃপর সে আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে এবং যাকে আপনার সাহায্যের মাধ্যমে কর্মে নিয়োজিত করেছেন; অতঃপর সে আপনার আনুগত্য করেছে। হে নিকটবর্তী সত্তা! যিনি তাঁর প্রতি দাম্ভিক আচরণকারী থেকেও দূরে সরে যান না; হে অত্যন্ত দানশীল, মহানুভব সত্তা! যিনি কার্পণ্য করেন না ঐসব ব্যক্তির প্রতি যারা তাঁর কাছে সওয়াব প্রত্যাশা করেছে।
হে আমার ইলাহ্! আমাকে এমন এক হৃদয় দিন যার আগ্রহ তাকে (আমাকে) আপনার নিকটবর্তী করবে, এমন এক জিহ্বা দিন যার সত্যবাদিতা আপনার কাছে উন্নীত হবে, এমন দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন চক্ষু দান করুন যার অধিকার (সুষ্ঠু ব্যবহার) যাকে আপনার সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে। হে আমার ইলাহ্! যে আপনাকে চিনেছে সে বিস্মৃত ও উপেক্ষিত হয় না। আর যে আপনার কাছে আশ্রয় নিয়েছে সে কখনই আপনার সাহায্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় না। আর যার দিকে আপনি এগিয়ে আসেন সে কখনই অস্থির বা পেরেশান হয় না। হে আমার ইলাহ্! নিশ্চয়ই যে আপনার মাধ্যমে পথ চলেছে সে-ই আলোকপ্রাপ্ত। আর যে আপনার রজ্জুকে আঁকড়ে ধরে আসলে সে-ই মুক্তিপ্রাপ্ত।
হে আমার ইলাহ্! আমি আপনার আশ্রয় নিয়েছি। অতঃপর আপনার রহমতের ব্যাপারে আমার যে সুধারণা আছে তা ব্যর্থ করে দেবেন না। আপনার অনুগ্রহ প্রাপ্তি থেকে আমাকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। হে আমার ইলাহ্! আপনার বন্ধুদের মাঝে যারা আপনার বেশি ভালোবাসা প্রত্যাশা করেছে তাদের স্থানে আমাকে অধিষ্ঠিত করুন।
হে আমার ইলাহ্! আপনাকে স্মরণ করার মাধ্যমে আপনার স্মরণকে জাগরূক রাখার জন্য আমাকে আগ্রহ-উদ্দীপ্ত করুন। আর আপনার পবিত্র নামসমূহের মাধ্যমে নাজাত-প্রাপ্তি এবং আপনার পবিত্র সান্নিধ্যে অবস্থান লাভ করার উচ্চ সংকল্প দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করুন। হে আমার ইলাহ্! আপনার কাছে আপনার মাধ্যমেই আমি দলিল পেশ করছি যাতে করে আপনি আমাকে আপনার অনুগত বান্দাদের পর্যায়ে অধিষ্ঠিত এবং আপনার সন্তুষ্টি আনয়ন করার যোগ্য স্থানে প্রবেশ করান। কারণ আমি নিজকে সুরক্ষা করতে সক্ষম নই এবং আমি নিজের উপকার করারও অধিকারী নই।
হে আমার ইলাহ্! আমি আপনার দুর্বল, অপরাধী এবং আপনার কাছে অনুশোচনাকারী পাপী বান্দা। সুতরাং আমাকে ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করবেন না যাদের থেকে আপনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং যাদের ভুল-ত্রুটি তাদেরকে আপনার ক্ষমা থেকে বাধাগ্রস্ত করেছে। হে আমার ইলাহ্! আপনি আমাকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একমাত্র আপনার দিকে পুরোপুরি রুজু হওয়ার তওফিক দিন। আমাদের অন্তরের চোখগুলোকে আপনার দিকে দৃষ্টি দেয়ার মাধ্যমে আলোকিত করে দিন যাতে করে অন্তঃচক্ষুর দৃষ্টিসমূহ আলোর পর্দাগুলো ভেদ করে মহত্ত্বের খনিতে গিয়ে উপনীত হয় এবং আপনার পবিত্র সত্তার সম্মানের সাথে আমাদের আত্মা সংযুক্ত হয়।
হে আমার ইলাহ্! আমাকে ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করে দিন যাদেরকে আপনি আহ্বান করেছেন; অতঃপর তারা আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে, যাদের ওপর আপনি শুভ দৃষ্টি দিয়েছেন; অতঃপর তারা আপনার মহিমা ও গৌরব দর্শন করতঃ চিৎকার করে উঠেছে। অতঃপর আপনি তাদের সাথে সংগোপনে কথোপকথন করেছেন এবং তারা আপনার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে কর্ম সম্পাদন করেছে।
হে আমার ইলাহ্! আমি আমার সুধারণার ওপর হতাশাব্যঞ্জক চিন্তাকে কর্তৃত্বশীল করিনি এবং আপনার অনুপম দয়া ও দানের ব্যাপারে আমার আশা ছিন্নভিন্ন ও কর্তিত হয়ে যায় নি। হে আমার ইলাহ্! যদি আমার অপরাধগুলো আপনার কাছে আমাকে অধঃপতিত করে দেয় তাহলে আপনি আমাকে আপনার উপর নির্ভরতার বদৌলতে মার্জনা করে দিন। হে আমার ইলাহ্! যদি পাপ ও অপরাধ আমাকে আপনার মহান কৃপার পর্যায় থেকে নিচে ফেলে দিয়ে থাকে তাহলে আপনার মহান দয়া ও করুণার প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাকে জাগ্রত করবে।
হে আমার ইলাহ্! আপনার সাথে সাক্ষাৎ করার যোগ্যতা অর্জন করা থেকে অমনোযোগী হবার কারণে আমি যদি অসচেতনতার নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে যাই তাহলে আপনার সুমহান নেয়ামতসমূহ সংক্রান্ত (আমার) পরিচিতি (জ্ঞান) আমাকে জাগ্রত করুক। হে আমার ইলাহ্! যদি আপনার ভয়ঙ্কর শাস্তি আমাকে জাহান্নামের আগুনের দিকে আহ্বান করে তাহলে আপনার মহান পুণ্য ও পুরস্কার আমাকে জান্নাতের দিকে আহ্বান করে।
হে আমার ইলাহ্! একমাত্র আপনার কাছেই আমি চাচ্ছি, একমাত্র আপনার কাছেই প্রার্থনা এবং প্রত্যাশা করছি। আপনার কাছে প্রার্থনা করছি যাতে করে আপনি হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর বংশধরগণের ওপর দরূদ ও সালাত প্রেরণ করেন। আমাকে ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করুন যারা সর্বক্ষণ আপনার জিকির করে, আপনার সাথে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে না, আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা থেকে বিন্দুমাত্র গাফেল হয় না এবং আপনার নির্দেশকে তুচ্ছ জ্ঞান করে না।
হে আমার ইলাহ্! আপনার সর্বোচ্চ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত সম্মানের আলোর সাথে আমাকে সংযুক্ত করে দিন যাতে করে আমি আপনার সঠিক পরিচিতি পাই এবং আপনি ছাড়া সব কিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিই এবং আপনার ব্যাপারে ভীত ও সতর্ক হই। হে সকল মহিমা ও সম্মানের অধিকারী! হে আল্লাহ্! হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র বংশধরগণের ওপর দরূদ ও সালাত অবতীর্ণ করুন এবং তাঁদেরকে বেশি বেশি শান্তি ও নিরাপত্তা প্রদান করুন।
[এ দোয়াটি বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের মহান ইমামগণ থেকে বর্ণিত প্রসিদ্ধ দোয়াসমূহের একটি। শেখ আব্বাস কুমী সংকলিত ‘মাফাতিহুল জিনান’ গ্রন্থে এ দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে। মূল আরবী থেকে এটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মো. মুনীর হোসেন খান।]
আরবী টেক্সট :
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ عَلَى آلِ مُحَمَّدٍ وَ اسْمَعْ نِدَائِي إِذَا نَادَيْتُكَ وَ اسْمَعْ دُعَائِي إِذَا دَعَوْتُكَ وَ أَقْبِلْ عَلَيَّ إِذَا نَاجَيْتُكَ فَقَدْ هَرَبْتُ إِلَيْكَ وَ وَقَفْتُ بَيْنَ يَدَيْكَ مُسْتَكِيناً لَكَ مُتَضَرِّعاً إِلَيْكَ رَاجِياً لِمَا لَدَيْكَ تَرَانِي وَ تَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِي وَ تُخْبِرُ حَاجَتِي وَ تَعْرِفُ ضَمِيرِي وَ لَا يَخْفَى عَلَيْكَ أَمْرُ مُنْقَلَبِي وَ مَثْوَايَ وَ مَا أُرِيدُ أَنْ أُبْدِئَ بِهِ مِنْ مَنْطِقِي وَ أَتَفَوَّهُ بِهِ مِنْ طَلِبَتِي وَ أَرْجُوهُ لِعَاقِبَةِ أَمْرِي وَ قَدْ جَرَتْ مَقَادِيرُكَ عَلَيَّ يَا سَيِّدِي فِيمَا يَكُونُ مِنِّي إِلَى آخِرِ عُمُرِي مِنْ سَرِيرَتِي وَ عَلَانِيَتِي وَ بِيَدِكَ لَا بِيَدِ غَيْرِكَ زِيَادَتِي وَ نَقْصِي وَ نَفْعِي وَ ضُرِّي إِلَهِي إِنْ حَرَمْتَنِي فَمَنْ ذَا الَّذِي يَرْزُقُنِي وَ إِنْ خَذَلْتَنِي فَمَنْ ذَا الَّذِي يَنْصُرُنِي إِلَهِي أَعُوذُ بِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ حُلُولِ سَخَطِكَ إِلَهِي إِنْ كُنْتُ غَيْرَ مُسْتَأْهِلٍ لِرَحْمَتِكَ فَأَنْتَ أَهْلٌ أَنْ تَجُودَ عَلَيَّ بِفَضْلِ سَعَتِكَ إِلَهِي كَأَنِّي بِنَفْسِي وَاقِفَةٌ بَيْنَ يَدَيْكَ وَ قَدْ أَظَلَّهَا حُسْنُ تَوَكُّلِي عَلَيْكَ فَفَعَلْتَ فَقُلْتَ مَا أَنْتَ أَهْلُهُ وَ تَغَمَّدْتَنِي بِعَفْوِكَ إِلَهِي فَإِنْ عَفَوْتَ فَمَنْ أَوْلَى مِنْكَ بِذَلِكَ وَ إِنْ كَانَ قَدْ دَنَا أَجَلِي وَ لَمْ يُدْنِنِي مِنْكَ عَمَلِي فَقَدْ جَعَلْتُ الْإِقْرَارَ بِالذَّنْبِ إِلَيْكَ وَسِيلَتِي إِلَهِي قَدْ جُرْتُ عَلَى نَفْسِي فِي النَّظَرِ لَهَا فَلَهَا الْوَيْلُ إِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَهَا إِلَهِي لَمْ يَزَلْ بِرُّكَ عَلَيَّ أَيَّامَ حَيَاتِي فَلَا تَقْطَعْ بِرَّكَ عَنِّي فِي مَمَاتِي وَ أَنْتَ لَمْ تُوَلِّنِي إِلَّا الْجَمِيلَ فِي حَيَاتِي إِلَهِي تَوَلَّ مِنْ أَمْرِي مَا أَنْتَ أَهْلُهُ وَ عُدْ بِفَضْلِكَ عَلَى مُذْنِبٍ قَدْ غَمَرَهُ جَهْلُهُ إِلَهِي قَدْ سَتَرْتَ عَلَيَّ ذُنُوباً فِي الدُّنْيَا وَ أَنَا أَحْوَجُ إِلَى سَتْرِهَا عَلَيَّ مِنْكَ فِي الْأُخْرَى إِلَهِي قَدْ أَحْسَنْتَ إِلَيَّ إِذْ لَمْ تُظْهِرْهَا لِأَحَدٍ مِنْ عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ فَلَا تَفْضَحْنِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْأَشْهَادِ إِلَهِي جُودُكَ بَسَطَ أَمَلِي وَ عَفْوُكَ أَفْضَلُ مِنْ عَمَلِي إِلَهِي فَسُرَّنِي بِلِقَائِكَ يَوْمَ تَقْضِي فِيهِ بَيْنَ عِبَادِكَ إِلَهِي اعْتِذَارِي إِلَيْكَ اعْتِذَارُ مَنْ لَمْ يَسْتَغْنِ عَنْ قَبُولِ عُذْرِهِ فَاقْبَلْ عُذْرِي يَا أَكْرَمَ مَنِ اعْتَذَرَ إِلَيْهِ الْمُسِيئُونَ إِلَهِي لَا تَرُدَّ حَاجَتِي وَ لَا تُخَيِّبْ طَمَعِي وَ لَا تَقْطَعْ مِنْكَ رَجَائِي وَ أَمَلِي إِلَهِي لَوْ أَرَدْتَ هَوَانِي لَمْ تَهْدِنِي وَ لَوْ أَرَدْتَ فَضِيحَتِي لَمْ تُعَافِنِي إِلَهِي مَا أَظُنُّكَ تَرُدُّنِي فِي حَاجَةٍ قَدْ أَفْنَيْتُ عُمُرِي فِي طَلَبِهَا مِنْكَ إِلَهِي فَلَكَ الْحَمْدُ أَبَداً أَبَداً دَائِماً سَرْمَداً يَزِيدُ وَ لَا يَبِيدُ كَمَا تُحِبُّ فَتَرْضَى إِلَهِي إِنْ أَخَذْتَنِي بِجُرْمِي أَخَذْتُكَ بِعَفْوِكَ وَ إِنْ أَخَذْتَنِي بِذُنُوبِي أَخَذْتُكَ بِمَغْفِرَتِكَ وَ إِنْ أَدْخَلْتَنِي النَّارَ أَعْلَمْتُ أَهْلَهَا أَنِّي أُحِبُّكَ إِلَهِي إِنْ كَانَ صَغُرَ فِي جَنْبِ طَاعَتِكَ عَمَلِي فَقَدْ كَبُرَ فِي جَنْبِ رَجَائِكَ أَمَلِي إِلَهِي كَيْفَ أَنْقَلِبُ مِنْ عِنْدِكَ بِالْخَيْبَةِ مَحْرُوماً وَ قَدْ كَانَ حُسْنُ ظَنِّي بِجُودِكَ أَنْ تَقْلِبَنِي بِالنَّجَاةِ مَرْحُوماً إِلَهِي وَ قَدْ أَفْنَيْتُ عُمُرِي فِي شِرَّةِ السَّهْوِ عَنْكَ وَ أَبْلَيْتُ شَبَابِي فِي سَكْرَةِ التَّبَاعُدِ مِنْكَ إِلَهِي فَلَمْ أَسْتَيْقِظْ أَيَّامَ اغْتِرَارِي بِكَ وَ رُكُوبِي إِلَى سَبِيلِ سَخَطِكَ إِلَهِي وَ أَنَا عَبْدُكَ وَ ابْنُ عَبْدَيْكَ قَائِمٌ بَيْنَ يَدَيْكَ مُتَوَسِّلٌ بِكَرَمِكَ إِلَيْكَ إِلَهِي أَنَا عَبْدٌ أَتَنَصَّلُ إِلَيْكَ مِمَّا كُنْتُ أُوَاجِهُكَ بِهِ مِنْ قِلَّةِ اسْتِحْيَائِي مِنْ نَظَرِكَ وَ أَطْلُبُ الْعَفْوَ مِنْكَ إِذِ الْعَفْوُ نَعْتٌ لِكَرَمِكَ إِلَهِي لَمْ يَكُنْ لِي حَوْلٌ فَأَنْتَقِلَ بِهِ عَنْ مَعْصِيَتِكَ إِلَّا فِي وَقْتٍ أَيْقَظْتَنِي لِمَحَبَّتِكَ فَكَمَا أَرَدْتَ أَنْ أَكُونَ كُنْتُ فَشَكَرْتُكَ بِإِدْخَالِي فِي كَرَمِكَ وَ لِتَطْهِيرِ قَلْبِي مِنْ أَوْسَاخِ الْغَفْلَةِ عَنْكَ إِلَهِي انْظُرْ إِلَيَّ نَظَرَ مَنْ نَادَيْتَهُ فَأَجَابَكَ وَ اسْتَعْمَلْتَهُ بِمَعُونَتِكَ فَأَطَاعَكَ يَا قَرِيباً لَا يَبْعُدُ عَنِ الْمُغْتَرِّ بِهِ وَ يَا جَوَاداً لَا يَبْخَلُ عَمَّنْ رَجَا ثَوَابَهُ إِلَهِي هَبْ لِي قَلْباً يُدْنِيهِ مِنْكَ شَوْقُهُ وَ لِسَاناً يَرْفَعُهُ إِلَيْكَ صِدْقُهُ وَ نَظَراً يُقَرِّبُهُ مِنْكَ حَقُّهُ إِلَهِي إِنَّ مَنْ تَعَرَّفَ بِكَ غَيْرُ مَجْهُولٍ وَ مَنْ لَاذَ بِكَ غَيْرُ مَخْذُولٍ وَ مَنْ أَقْبَلْتَ عَلَيْهِ غَيْرُ مَمْلُولٍ إِلَهِي إِنَّ مَنِ انْتَهَجَ بِكَ لَمُسْتَنِيرٌ وَ إِنَّ مَنِ اعْتَصَمَ بِكَ لَمُسْتَجِيرٌ وَ قَدْ لُذْتُ بِكَ يَا سَيِّدِي فَلَا تُخَيِّبَنَّ ظَنِّي مِنْ رَحْمَتِكَ وَ لَا تَحْجُبْنِي عَنْ رَأْفَتِكَ إِلَهِي أَقِمْنِي فِي أَهْلِ وَلَايَتِكَ مُقَامَ مَنْ رَجَا الزِّيَادَةَ مِنْ مَحَبَّتِكَ إِلَهِي وَ أَلْهِمْنِي وَلَهاً بِذِكْرِكَ إِلَى ذِكْرِكَ وَ همني اجْعَلْ هِمَّتِي إِلَى رَوْحِ نَجَاحِ أَسْمَائِكَ وَ مَحَلِّ قُدْسِكَ إِلَهِي بِكَ عَلَيْكَ إِلَّا أَلْحَقْتَنِي بِمَحَلِّ أَهْلِ طَاعَتِكَ وَ الْمَثْوَى الصَّالِحِ مِنْ مَرْضَاتِكَ فَإِنِّي لَا أَقْدِرُ لِنَفْسِي دَفْعاً وَ لَا أَمْلِكُ لَهَا نَفْعاً إِلَهِي أَنَا عَبْدُكَ الضَّعِيفُ الْمُذْنِبُ وَ مَمْلُوكُكَ الْمُنِيبُ الْمُغِيثُ فَلَا تَجْعَلْنِي مِمَّنْ صَرَفْتَ عَنْهُ وَجْهَكَ وَ حَجَبَهُ سَهْوُهُ عَنْ عَفْوِكَ إِلَهِي هَبْ لِي كَمَالَ الِانْقِطَاعِ إِلَيْكَ وَ أَنِرْ أَبْصَارَ قُلُوبِنَا بِضِيَاءِ نَظَرِهَا إِلَيْكَ حَتَّى تَخْرِقَ أَبْصَارُ الْقُلُوبِ حُجُبَ النُّورِ فَتَصِلَ إِلَى مَعْدِنِ الْعَظَمَةِ وَ تَصِيرَ أَرْوَاحُنَا مُعَلَّقَةً بِعِزِّ قُدْسِكَ إِلَهِي وَ اجْعَلْنِي مِمَّنْ نَادَيْتَهُ فَأَجَابَكَ وَ لَاحَظْتَهُ فَصَعِقَ بِجَلَالِكَ فَنَاجَيْتَهُ سِرّاً وَ عَمِلَ لَكَ جَهْراً إِلَهِي لَمْ أُسَلِّطْ عَلَى حُسْنِ ظَنِّي قُنُوطَ الْإِيَاسِ وَ لَا انْقَطَعَ رَجَائِي مِنْ جَمِيلِ كَرَمِكَ إِلَهِي إِنْ كَانَتِ الْخَطَايَا قَدْ أَسْقَطَتْنِي لَدَيْكَ فَاصْفَحْ عَنِّي بِحُسْنِ تَوَكُّلِي عَلَيْكَ إِلَهِي إِنْ حَطَّتْنِي الذُّنُوبُ مِنْ مَكَارِمِ لُطْفِكَ فَقَدْ نَبَّهَنِي الْيَقِينُ إِلَى كَرَمِ عَطْفِكَ إِلَهِي إِنْ أَنَامَتْنِي الْغَفْلَةُ عَنِ الِاسْتِعْدَادِ لِلِقَائِكَ فَقَدْ نَبَّهَتْنِي الْمَعْرِفَةُ بِكَرَمِ آلَائِكَ إِلَهِي إِنْ دَعَانِي إِلَى النَّارِ عَظِيمُ عِقَابِكَ فَقَدْ دَعَانِي إِلَى الْجَنَّةِ جَزِيلُ ثَوَابِكَ إِلَهِي فَلَكَ أَسْأَلُ وَ إِلَيْكَ أَبْتَهِلُ وَ أَرْغَبُ وَ أَسْأَلُكَ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ أَنْ تَجْعَلَنِي مِمَّنْ يُدِيمُ ذِكْرَكَ وَ لَا يَنْقُضُ عَهْدَكَ وَ لَا يَغْفُلُ عَنْ شُكْرِكَ وَ لَا يَسْتَخِفُّ بِأَمْرِكَ إِلَهِي وَ أَتْحِفْنِي بِنُورِ عِزِّكَ الْأَبْهَجِ فَأَكُونَ لَكَ عَارِفاً وَ عَنْ سِوَاكَ مُنْحَرِفاً وَ مِنْكَ خَائِفاً مُتَرَقِّباً يَا ذَا الْجَلَالِ وَ الْإِكْرَامِ وَ صَلَّى اللَّهُ عَلَى مُحَمَّدٍ رَسُولِهِ وَ آلِهِ الطَّاهِرِينَ وَ سَلَّمَ.
শাবান মাসের বিশেষ দরুদ
শাবান মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্যে অনেক বিজ্ঞ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান একটি বিশেষ সালাওয়াত বা দরুদ পড়ে থাকেন। এটি দরুদে শাবান নামে পরিচিত এবং রাসূল (স.)’র আহলে বাইত ইমাম জাইনুল আবেদিন বিন হুসাইন বিন আলী (আ.) এই দরুদের রচয়িতা। তাঁর হৃদয়ের গভীর থেকে প্রেমার্ত কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল:
اَللّـهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد، شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ، وَمَوْضِعِ الرِّسالَةِ، وَمُخْتَلَفِ الْمَلائِكَةِ، وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ، وَاَهْلِ بَيْتِ الْوَحْىِ، اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد، اَلْفُلْكِ الْجارِيَةِ فِى اللُّجَجِ الْغامِرَةِ، يَأْمَنُ مَنْ رَكِبَها، وَيَغْرَقُ مَنْ تَرَكَهَا، اَلْمُتَقَدِّمُ لَهُمْ مارِقٌ، وَالْمُتَاَخِّرُ عَنْهُمْ زاهِقٌ، وَاللاّزِمُ لَهُمْ لاحِقٌ، اَللّـهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد، اَلْكَهْفِ الْحَصينِ، وَغِياثِ الْمُضْطَرِّ الْمُسْتَكينِ، وَمَلْجَأِ الْهارِبينَ، وَعِصْمَةِ الْمُعْتَصِمينَ،
হে আল্লাহ, আপনার দরুদ ও শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদ ও তাঁর বংশের ওপর যারা নবুওতের বৃক্ষস্বরূপ,যারা ফেরেশতাগণের আসা-যাওয়ার কেন্দ্র; যারা জ্ঞান ও প্রজ্ঞার খনি এবং যারা আল্লাহর প্রত্যাদেশপ্রাপ্ত মহা পুরুষগণের পবিত্র বংশ। হে আল্লাহ আপনার দরুদ বা শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদ ও তাঁর বংশের ওপর যারা মারেফাত বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান সাগরের জাহাজস্বরূপ। আর যারা ঐ জাহাজে আরোহণ করবে, তারা ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে,আর যারাই এই জাহাজে আরোহণ করবে না তারা ধ্বংসের সাগরে নিমজ্জিত হবে। যে কেউ তাঁদের অর্থাৎ আহলে বাইতের চেয়ে আগ বাড়িয়ে চলার চেষ্টা করবে সে ধর্ম থেকে বের হয়ে যাবে, আর যে কেউ তাদের থেকে পিছনে থাকবে তার প্রচেষ্টা পণ্ডশ্রমে পরিণত হবে, আর যে কেউ মহানবীর (সা.) আহলে বাইতের আদর্শের পথে থাকবে সে তাঁদের সাথে মিলিত হবে। হে আল্লাহ আপনার দরুদ বা শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদ ও তাঁর বংশের ওপর, যারা নিরাপত্তার সুদৃঢ় দুর্গ বা বেষ্টনী, অসহায় দু:স্থ ও আশ্রয়প্রার্থী লোকদের ফরিয়াদে সাড়া দানকারী এবং যারা চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষায় আগ্রহী ব্যক্তিদের প্রহরী।
اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد، صَلاةً كَثيرَةً تَكُونُ لَهُمْ رِضاً، وَلِحَقِّ مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد اَدآءً وَقَضآءً، بِحَوْل مِنْكَ وَقُوَّة يا رَبَّ الْعالَمينَ.
হে আল্লাহ, আপনার দরুদ ও শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র বংশের ওপর এবং তাঁদের ওপর এত বেশি দরুদ বর্ষিত হোক যাতে তাঁরা যেন সন্তুষ্ট হন ও আমাদের ওপর তাঁদের যে হক বা অধিকার রয়েছে তা যেন এতে আদায় হয়। হে জগতসমূহের প্রতিপালক প্রভু, সমস্ত শক্তির মালিক শুধু আপনি।
اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد، اَلطَّيِّبينَ الاْبْرارِ الاْخْيارِ، اَلَّذينَ اَوْجَبْتَ حُقُوقَهُمْ، وَفَرَضْتَ طاعَتَهُمْ وَوِلايَتَهُمْ، اَللّـهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّد وَآلِ مُحَمَّد، وَاعْمُرْ قَلْبى بِطاعَتِكَ، وَلا تُخْزِنى بِمَعْصِيَتِكَ، وَارْزُقْنى مُواساةَ مَنْ قَتَّرْتَ عَلَيْهِ مِنْ رِزْقِكَ، بِما وَسَّعْتَ عَلَىَّ مِنْ فَضْلِكَ، وَنَشَرْتَ عَلَىَّ مِنْ عَدْلِكَ،
হে আল্লাহ, আপনার দরুদ বা শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদ ও তাঁর বংশের ওপর। যারা পবিত্র,সতকর্মশীল এবং আল্লাহ মনোনীত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানব। আল্লাহ তাঁদের অধিকার রক্ষা করাকে আমাদের ওপর ওয়াজিব করে দিয়েছেন তেমনি তাঁদের প্রতি আনুগত্যের এবং তাঁদেরকে ভালবাসার নির্দেশ দিয়েছেন যা অবশ্যই পালনীয় বা ফরজ।
হে আল্লাহ, আপনার দরুদ ও শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মদ ও তাঁর বংশের ওপর; আমাদের অন্তরকে তাঁদের আনুগত্যে আলোকিত এবং ভরপুর করুন। আমাদেরকে বিদ্রোহী তথা খোদাদ্রোহী হিসেবে কলঙ্কিত করবেন না। আর আমাদের রিজিক এতটা বাড়িয়ে দিন যতটা আপনি আমাদের অনুগ্রহ করেছেন। যাতে দরিদ্ররাও এর থেকে তাদের অংশ নিতে পারে ও এরফলে আমরা আপনার ন্যায় বিচারকে তুলে ধরতে পারি।
وَاَحْيَيْتَنى تَحْتَ ظِلِّكَ، وَهذا شَهْرُ نَبِيِّكَ سَيِّدِ رُسُلِكَ، شَعْبانُ الَّذى حَفَفْتَهُ مِنْكَ بِالرَّحْمَةِ وَالرِّضْوانِ، اَلَّذى كانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَالِه وَسَلَّمَ، يَدْاَبُ فى صِيامِهِ وَقِيامِهِ، فى لَياليهِ وَاَيّامِهِ، بُخُوعاً لَكَ فى اِكْرامِهِ وَاِعْظامِهِ اِلى مَحَلِّ حِمامِهِ، اَللّـهُمَّ فَاَعِنّا عَلَى الاْسْتِنانِ بِسُنَّتِهِ فيهِ، وَنَيْلِ الشَّفاعَةِ لَدَيْهِ، اَللّـهُمَّ وَاجْعَلْهُ لى شَفيعاً مُشَفَّعاً، وَطَريقاً اِلَيْكَ مَهْيَعاً، وَاجْعَلْنى لَهُ مُتَّبِعاً، حَتّى اَلْقاكَ يَوْمَ الْقِيمَةِ عَنّى راضِياً، وَ عَنْ ذُنُوبى غاضِياً، قَدْ اَوْجَبْتَ لى مِنْكَ الرَّحْمَةَ وَالرِّضْوانَ، وَاَنْـزَلْتَنى دارَ الْقَـرارِ، وَ مَحَـلَّ الاْخْيـارِ.
হে আল্লাহ, আমাদেরকে আপনার ন্যায়বিচারের ছায়ায় বা আশ্রয়ে জীবিত রাখুন এবং এই মাস নবীগণের নেতা তথা আপনার রাসূল হযরত মোহাম্মদ (স.)র মাস, যে মাসকে আপনি রহমত ও সন্তুষ্টিতে ভরপুর করেছেন। রাসূল (স.)র ওপর ও তাঁর বংশের ওপর আপনার দরুদ বা শান্তি বর্ষিত হোক। যিনি এই মাসে অনেক ইবাদত সাধনা করেছেন নামাজ পড়ে ও রোজা রেখে দিনে এবং রাতে। এই মাসে তিনি অর্থাৎ রাসূল (স.) বিনম্র হয়ে আপনার দরবারে উপস্থিত হয়েছেন এবং এ কারণেই তিনি এই শাবান মাসকে মাসটির শেষ দিন পর্যন্ত ভালবেসেছেন ও শ্রদ্ধা করেছেন। হে আল্লাহ,আপনিও আমাদেরকে তার সুন্নাত বা আদর্শের অনুসারী হতে সাহায্য করুন এবং আমাদের জন্য তাঁর শাফায়াত নসীব করুন।
হে আল্লাহ, মহানবী (স.) কে আমাদের জন্য এমন শাফায়াতকারী করুন যার শাফায়াত বা সুপারিশ কবুল করা হবে। আমাদের জন্যে সঠিক পথ প্রশস্ত করে দিন যে পথ আপনার দিকে গেছে। আমাদেরকে মহানবী (স.) র অনুসারী করুন যাতে বিচার দিবসে আপনি আমাদের গোনাহগুলো লক্ষ্য না করেন, বরং হে আল্লাহ, আমাদের জন্যে আপনার দয়া অবধারিত করুন, আমাদেরকে চিরস্থায়ী বেহেশত যা সতকর্মশীলদের আবাসস্থল, তাতে আবাস দান করুন। #আইআরআইবি