বাঙ্গালী
Tuesday 26th of November 2024
0
نفر 0

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে মিয়ানমার

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইউএনএইচসিআরের সমঝোতা স্মারকে সই হওয়ার দেড় মাসের মাথায় মিয়ানমারের সঙ্গে এই ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে।

আবনা ডেস্কঃ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘অনুকূল পরিবেশ তৈরি’ এবং তাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর ও উন্নয়ন সংস্থা-ইউএনডিপি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইউএনএইচসিআরের সমঝোতা স্মারকে সই হওয়ার দেড় মাসের মাথায় মিয়ানমারের সঙ্গে এই ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে।
সমঝোতা স্মারকে কী থাকবে সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে দেশটির সরকারের সঙ্গে দুই সংস্থার মতৈক্য হয়েছে বলে ইউএনএইচসিআরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এতে বলা হয়েছে, যেহেতু পরিস্থিতি এখনও রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ফেরার জন্য সহায়ক নয়, তাই ওই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সরকারের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে এই সমঝোতা স্মারক হল প্রথম ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
রোহিঙ্গারা যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে নিজেদের ভূমিতে ফিরতে পারে এবং প্রত্যাবাসন যাতে স্থায়ী হয় তার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সহায়তার বিষয়ে একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরি করা হবে এই সমঝোতা স্মারকের আওতায়।
সমঝোতা স্মারক সইয়ের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে ইউএনএইচসিআর বলছে, আগামী সপ্তাহেই এটা সই হতে পারে।
এদিকে মিয়ানমার সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শিগগিরই’ সমঝোতা স্মারক সই হবে এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো রাখাইনে ‘কমিউনিটিভিত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে’ কর্মসংস্থানে সহায়তা করবে।
মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চার লাখের মতো মানুষ কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। এর মধ্যে গত বছর ২৫ আগস্ট রাখাইনে নতুন করে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছে আরও সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোহিঙ্গা সংকটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গত বছরের ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের সঙ্গে একটি সম্মতিপত্র সই করে বাংলাদেশ। এর ভিত্তিতে দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন এবং ১৬ জানুয়ারি ওই গ্রুপের প্রথম বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিভিন্ন বিষয় ঠিক করে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়।
এর পর প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সরকারকে আট হাজারের মতো রোহিঙ্গার একটি তালিকা দেওয়া হলেও এখনও কেউ রাখাইনে ফিরতে পারেনি।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ওই চুক্তি স্বাক্ষরের পর জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সে সময় বলেছিলেন- আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরকে সঙ্গে রাখা জরুরি ছিল বলে তিনি মনে করেন।
এর পর গত ১৩ এপ্রিল সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে ইউএনএইচসিআর। এতে মিয়ানমারে ‘অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সংস্থাটির সহায়তার কথা বলা হয়।
এখন মিয়ানমারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় ওই সমঝোতা স্মারকে সই হলে ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপি রাখাইনে রোহিঙ্গা বসতিতে যাওয়ার সুযোগ পাবে বলে ইউএনএইচসিআরের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
গত বছর আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর অভিযান শুরুর পর থেকে ওই এলাকায় আন্তর্জাতিক এসব সংস্থাকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাওয়ার সুযোগ পেলে ইউএনএইচসিআর মাঠপর্যায়ের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা এবং তাদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবে।
এ ছাড়া সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তথ্য জানাতে পারবে, যাতে স্বেচ্ছায় ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের ফেরার মতো অবস্থা হলে তারা যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সমঝোতা স্মারক সই হলে রাখাইন নিয়ে কফি আনান নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপির সঙ্গে কাজ করতে মিয়ানমার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালায় রাখাইনে শান্তির জন্য ধর্ম ও গোষ্ঠীগত পরিচয় নির্বিশেষে সবার নাগরিকত্ব এবং চলাচলের অধিকারপ্রাপ্তির কথা বলা হয়েছে।মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না দেওয়ায় অসন্তোষ ছিল এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইন্তিফাদার ...
আবনা : ইয়েমেন আগ্রাসীদের ...
সিরিয়া- লেবানন অভিন্ন সীমান্তে ...
বাহরাইনে ইমাম হোসাইন (আ.)এর ...
পশ্চিমবঙ্গে প্রবীণ খ্রিস্টান ...
মোরায় কক্সবাজারে দুই শতাধিক ...
ক্যান্সার দিবস : যে লক্ষণগুলো ...
আনসারুল্লাহ'র দখলে সৌদি আরবের ...
২৮০ জন শরণার্থীকে সমুদ্রে ...
সন্ত্রাসবাদ রুখতে ঐক্যবদ্ধ ...

 
user comment