জনৈক ব্যক্তি নবী (সঃ) বংশের ষষ্ঠ পুরুষ ইমাম জাফর বিন মুহাম্মদ -এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালো, আল্লাহকে চেনার জন্যে আমাকে দিক নির্দেশনা দিন।
ইমাম প্রতিত্তোরে বললেন,
‘জাহাযে কখনো আরোহণ করেছো?’
‘হ্যাঁ’ উত্তর দিল লোকটি।
ইমাম বললেন,
‘কখনো কি এমনটি হয়েছে যে তোমাদের জাহাযের পাটাতন ভেঙ্গে গিয়েছিল? আর তুমি সাতারও জানতে না?’
‘হ্যাঁ’ এমনটি হয়েছিল, লোকটি বলল, ‘ঐ সীমাহীন হতাশা ও অনন্ত নিরাশার মাঝেও কি তোমার অন্তরের গভীরে কোন অজানা শক্তির ঝংকার শব্দ হয়নি, যে তোমাকে এ মহাবিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে?’
ইতিবাচক উত্তর দিলো লোকটি এবং বললো,
‘আমি তখন অন্তর থেকে অনুভব করছিলাম যে, এমন একটি শক্তি আছে যিনি আমাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন’।
লোকটিকে উদ্দেশ্য করে ইমাম বললেন, ‘তুমি যে শক্তির উপস্থিতি অনুভব করছিলে তিনি-ই মহান আল্লাহ, সকল কিছুর স্রষ্টা। (২৩। তাওহীদ সাদুক, পৃঃ ২৩১, নূতন প্রিন্ট।)
দুই : একদা মুফায্যাল নামক ইমাম জাফর বিন মুহাম্মাদের একজন ঘনিষ্ট ছাত্র ইমামের খেদমতে আরজ পেশ করলো,
‘আমরা যখন এ বিশ্বজগতের শৃঙ্খলা-বিন্যাসের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পেশ করতে চেষ্টা করি তখন একদল নাস্তিক ও বস্তুবাদী লোক বলে উঠেন ...ওসব কিছুকে প্রকৃতি সৃষ্টি করেছে’।
ইমাম বলেন, ‘ঠিক আছে, যদি প্রকৃতির উদ্দেশ্য ও অর্থ এমন কোন সত্তাকে বুঝানো হয়ে থাকে যিনি জ্ঞানী, শক্তিশালী, স্বাধীন ও প্রজ্ঞাবান, তাহলে তিনিই মহান আল্লাহ। ভুলবশত : তারা নামকরণ করেছেন প্রকৃতি। আর যদি প্রকৃতির অর্থ এমন কোন অস্তিত্বের কথা বোঝানো হয়ে থাকে যার জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি ও স্বাধীনতা নেই তবে সে তো এক কল্পনার বস্তু। বিশ্বজগতের এতসব বিষ্ময়কর শৃঙ্খলা-বিন্যাস ও ঐক্য সামঞ্জস্য ব্যবস্থাপনা কখনো প্রকৃতি নামক কোন নির্বোধ জ্ঞানহীন ও অন্ধ-বধির সত্তার মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে না’। (তাওহীদ মুফায্যাল, পৃঃ ৫৫, নাজাফ প্রিন্ট।)