বাঙ্গালী
Tuesday 26th of November 2024
0
نفر 0

আল-কায়েদার সহিংসতার শিকার এক ইরাকি নারীর আত্মকথা

আল-কায়েদার সহিংসতার শিকার এক ইরাকি নারী সন্ত্রাসী এ চক্রের বিভিন্ন অপরাধকর্মের তথ্য প্রকাশ করেছে। বলেছেন সন্ত্রাসী এ বাহিনী’র সদস্যদের যৌন নির্যাতনের শিকার নারীদের কাহিনী এবং সে সব নারীদের থেকে যে সকল সন্তান জন্ম নিয়েছে তারা পিতৃ পরিচয়হীন। তিনি বলেছেন : অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ ধরণের অসহায় নারীদেরকে আত্মঘাতী হামলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা আবনার রিপোর্ট : ‘উম্মে সালমা’ বয়স ২৩, বাবা ছিলেন আল-কায়েদা নেতা। তিনি কখনই ভাবেননি যে, তার পিতা তাকে এমন একটি বিয়ের পিড়িতে বসতে বাধ্য করবেন, যার করুণ পরিণতি তার স্বামী ও শিশু সন্তানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ঘটবে।

ইরাকি এ নারী বলেন : এ ঘটনা আমি এ পর্যন্ত কারো নিকট বর্ণনা করিনি। আমি একজন সৌদি নাগরিকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। সে দিয়ালি অঞ্চলের একটি সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল। আমি চাই আপনার মাধ্যমে আল-কায়েদার বিভিন্ন গোপন অপরাধকর্মের কথা প্রকাশ করতে, যার শিকার হয়েছে অগণিত নারী। তারা বর্তমানে পিতৃপরিচয়হীন সন্তানের জননী। আমার মত অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ের পিড়িতে বসতে বাধ্য হয়েছে।

ঘটনাটি হচ্ছে ঐ সময়কার যখন ইরাকের দিয়ালা প্রদেশের ওপর আল-কায়দা জঙ্গীদের কর্তৃত্ব ছিল।

২০০৫ সালে আমার বাবা আল-কায়েদার জঙ্গীদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করতো। তিনি প্রতিদিন আরবি পোশাক পরা ৩ জন লোকের সাথে বাড়ীতে আসতেন –যাদের কথাবার্তা শুনে বোঝা যেত যে, তারা ইরাকি নয়- এবং আমার মাকে বলতেন তারা মসুলের অধিবাসী।

হঠাত একদিন বাবা বাড়ীতে এসে বিয়ের জন্য প্রস্তুত নিতে বললেন এবং এও জানালেন যে, কয়েক ঘন্টার বেশী সময় হাতে নেই। আমার মা আমাকে শুধু এতটুকুই বললেন যে, আমি একজন সৌদি নাগরিকের স্ত্রী হতে যাচ্ছি। ঐ রাতের জন্য প্রস্তুতকৃত কামরায় আমাকে রাখা হলো। কিছুক্ষণ পর একজন পুরুষ কামরায় প্রবেশ করে সালাম বিনিময়ের পর হিংস্র পশুর মত আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। সে একনাগাড়ে চারদিন আমার সাথে যৌন মিলন করে, সে আমার সাথে কোন কথাই বলতো না। শুধুমাত্র সহবাসের ইচ্ছা প্রকাশের জন্য সে আমার সাথে কথা বলতো এছাড়া আর কোন কথা বলতো না।

পিতৃপরিচয়হীন শিশুদের জন্ম

এ বাধ্য বিয়ের পর আল কায়েদার অনেক গোপন তথ্যের কথা জানতে পারলাম, যেমন ; কিভাবে তাদেরকে আম্বার প্রদেশ হতে দিয়ালা প্রদেশের বিভিন্ন বাগানে স্থানান্তরিত করা হয়। এটাও জানতে পারলাম যে, তারা এ অঞ্চলের মেয়েদেরকে বিয়ে ও শরিয়তের নামে তাদের হিংস্র যৌনতার শিকারে পরিণত করে। আমি এমন ৫০ জন নারীকে চিনি, তাদের অনেকের সন্তানরা জানে না যে, কে তাদের বাবা! তাদের মায়েদের সাথে বহু পুরুষের মিলনের ফলে এমনটি হয়েছে। আল কায়েদা পরবর্তীতে এ সকল নারীদেরকে আত্মঘাতী হামলার কাজেও ব্যবহার করেছে।

(বলা হয় যে, আল কায়েদা ইরাকি নারীদেরকে আনসার ও মুহাজিরের নামে নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে আসতো। আর এ কারণে এ সকল নারীদের বৃহত সমস্যাবলীর অন্যতম হচ্ছে তাদের সন্তানরা জানে না যে, কে তাদের বাবা। কেননা তাদেরকে অল্প দিনের জন্য কয়েকজন পুরুষের সঙ্গ দিতে বাধ্য করা হত।)

আল কায়েদার হিংস্রতার শিকার ‘উম্মু সালমা’ এ সকল নারী ও তাদের সন্তানদেরকে ইরাকি পরিচয়পত্র দানের জন্য ইরাক সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

যখন ইরাকের এ সকল অসহায় নারী নিজেদের শরীরে অনায়াসে আত্মঘাতী বোমা বাঁধে

তিনি বলেন : আল কায়েদার সাথে জড়িত এ সকল নারীরা, নিরাপত্তা বাহিনী’র উপর হামলার বিষয়ে জঙ্গী এ দলটির বিভিন্ন নীল-নকশা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো। আল কায়েদার বার্তাসমূহেকে বিভিন্ন প্রদেশে পৌঁছানো ছিল তাদের অন্যতম কাজ। এছাড়া ইরাকি এবং মার্কিন ঘাঁটির ওপর হামলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যও তারা সংগ্রহ করতো। ‘রাজা’, ‘রানিয়া ইব্রাহিমে’র –যারা ছিল ছিল আত্মঘাতী- মত অনেক নারী রয়েছে; যাদের কেউ কেউ ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনী’র হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে, আবার কেউ কেউ তাদের স্বামীদের সাথে ইরাক ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেছে।

আল কায়েদার বিষয়ে গবেষণাকারী বিশিষ্ট গবেষক ‘আব্দুল্লাহ খলিফা’ এ সম্পর্কে বলেন : এ বিষয়টি বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। আল কায়েদার জঙ্গীরা তাদের যৌন লালসা মেটানোর জন্য অল্পবয়সী মেয়েদেরকে ব্যবহার করে। অতঃপর ধর্মের নামে তাদের কোমরে আত্মঘাতী বোমার বেল্ট বেঁধে দেয়, আর এভাবেই নির্মমভাবে তাদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।

ইরাকের সর্বপ্রথম আত্মঘাতী নারী ছিলেন বেলজিয়ামের অধিবাসী

তিনি বলেন : ২০০৪ সালে যখন আল কায়েদার ইরাক শাখা ‘আবু মুসয়াব যারকাভি’র নেতৃত্বে তত্পর ছিল ঐ সময় সর্বপ্রথম এক নারী আত্মঘাতী হামলা চালায়। আত্মঘাতী ঐ নারী ছিল বেলজিয়ামের নাগরিক এবং তার নাম ছিল ‘মারিল দিগুক’। সে এ পদক্ষেপের মাধ্যমে অন্যান্য নারীদের জন্য আত্মঘাতী হামলা চালানোর পথ উন্মুক্ত করে দেয়।

২০০৭ সাল হতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত নারীরা ৩৭টি আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে

খলিফা বলেন : ২০০৭ হতে ২০০৯ সাল নাগাদ দিয়ালা ও আল আনবার প্রদেশে ঘাঁটি স্থাপন করেছিল আল কায়েদা। তারা এ সকল অসহায় নারীদের ব্যবহার করে ৩৭টি আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটায়। অবশ্য আল কায়েদার আত্মঘাতী হামলার সাথে জড়িত নারীদের বিশাল একটি নেটওয়ার্ককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছিল ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী।

‘বেহেশতের কবুতর’ নাম দিয়ে ইরাকি শিশু-কিশোরদেরকে প্রতারিত করেছে আল কায়েদা

যখন আল কায়েদার এ প্রতারণা সকলের সম্মুখে প্রকাশিত হল, তখন তারা ‘বেহেশতের কবুতর’ নামে নতুন একটি সংগঠন চালু করলো। তারা এর মাধ্যমে শিশু-কিশোরদেরকে ব্যবহার করে ২৫টি আত্মঘাতী হামলা চালায়।

স্বামীর মৃত্যুর পর এক নারীকে প্রতারণা করে আত্মঘাতী বানালো আল কায়েদা

২০০৭ সালে ইরাক-যুক্তরাষ্ট্র যৌথবাহিনী’র হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আত

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

মার্কিন মিত্ররাই সিরিয়ায় ...
তুরস্কে ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি খুন
নিউ ইয়র্কে এবার ছুরিকাঘাতে ...
যশোরে ইমাম বাকির (আ.) এর ...
ফিলিস্তিন ও যায়নবাদ প্রসঙ্গ : ...
‘মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সা.)’ মুভি ...
শিশু নীরব হত্যা মামলার প্রধান ...
স্কুলে হিজাব পরায় মার্কিন মুসলিম ...
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ...
আয়াতুল্লাহ জাকজাকি বেঁচে আছেন ...

 
user comment