বাঙ্গালী
Saturday 11th of May 2024
0
نفر 0

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: সিরিয়ার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত দায়েশের ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে আইআরজিসি’র ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বিশ্ব গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ সংবাদের গুরুত্ব এতটাই বেশী ছিল যে, হামলার পরপরই এ সংক্রান্ত সংবাদ বিশ্বগণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নেয় এবং এ বিষয়ক সংবাদ ফলাও করে প্রচার করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

আমরা এ প্রতিবেদনে জনপ্রিয় কিছু গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া এবং এ সংক্রান্ত খবরের অংশ বিশেষ আপনাদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরবো।

দৈনিক হাআর্টজ এক টুইটে লিখেছে: বিগত ৩০ বছরে প্রথমবারের মত মধ্যম রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে ইরান।

একইভাবে এ হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে আরুট্‌স শু লিখেছে: দায়েশ কর্তৃক তেহরানে সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকারের পর ইরানি কর্মকর্তারা এ হামলার প্রতিশোধ গ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন।

মার্কিন দৈনিক ওয়ালস্ট্রীট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী সিরিয়ার ডেইর এয-যোর এলাকায় অবস্থিত দায়েশের ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; যা পূর্বে কখনও ঘটেনি। এছাড়া বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছে যে, যারাই ইরানের মাটিতে হামলা চালানোর দুঃসাহস দেখাবে তাদেরকে একই পদ্ধতিতে জবাব দেওয়া হবে।

জায়নবাদী ইসরাইলের ১০নং চ্যানেল ইসরাইলি এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছে যে, ‘সিরিয়ায় দায়েশের ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক শাহাব-৩ মডেলের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ্ত করে হামলা চালিয়েছে আইআরজিসি। এর রেঞ্জ ছিল ৮০০ থেকে ১২০০ কিলোমিটার’। চ্যানেলটি আরো উল্লেখ করেছে, রোববারের হামলাটি ছিল আইআরজিসি’র পক্ষ থেকে সরাসরি, অভূতপূর্ব এবং ব্যাপক পরিসরে।

এসোসিয়েটেড প্রেস এ সম্পর্কে লিখেছে: আইআরজিসি’র রোববারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ছিল ব্যাপক পরিসরের ও সরাসরি; যেমনটি আগে কখনও পরিলক্ষিত হয়নি। পাশাপাশি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের পূর্ণ সমর্থনে এ হামলা চালানো হয়েছে।

ফরাসী বার্তা সংস্থা তেহরানের সন্ত্রাসী হামলার প্রতি ইঙ্গিত করে লিখেছে, তেহরানে সন্ত্রাসী হামলার সাথে রিয়াদ জড়িত বলে ইরান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তুলেছিলেন। তেহরানের ঐ হামলার জবাবে আইআরজিসি, সিরিয়ায় অবস্থিত দায়েশের ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছে।

ইসরাইলের ৭নং চ্যানেল লিখেছে: (ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিষয়ে প্রদত্ত) আইআরজিসি’র বিবৃতিতে সৌদি আরব, ইসরাইল ও আমেরিকার জন্য ফিগারেটিভ হুমকি ছিল।

পশ্চিমা বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক সংকট ব্যবস্থপনা বিষয়ক টিমের সদস্য আলী ওয়ায়েজ এ হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন: ঐ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছিল সম্ভবত জুলফিকার মডেলের। মজার বিষয় হল ক্ষেপণাস্ত্র গুলো এমন স্থান থেকে (কেরমানশাহ ও কুর্দিস্তান) নিক্ষেপ করা হয়েছে যেখান থেকে সদস্য সংগ্রহের পদক্ষেপ নিয়েছিল দায়েশ।

জার্মানীর বিল্ড পত্রিকার সম্পাদক এক টুইটে লিখেছেন: মার্কিন বাহিনী কর্তৃক সিরিয় যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করার কিছুক্ষণ পরেই ইরান মধ্য রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মাধ্যমে এর জবাব দিয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে লিখেছে: সম্প্রতি তেহরানে সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদেরকে উচিত শিক্ষা দিতেই সিরিয়াতে তাদের অবস্থানকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।

মার্কিন এ দৈনিক আরও লিখেছে, এ হামলার মাধ্যমে ইরান সৌদি আরব, ইসরাইল ও আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শত্রুদের উদ্দেশ্যে সতর্ক বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের সংযোজন: আইআরজিসি’র ক্ষেপণাস্ত্র হামলা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সামরিক সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।

কাতার ভিত্তিক আল-জাজিরা নিউজ চ্যানেল ডেইর এয-যোরে দায়েশের অবস্থানকে লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতি ইঙ্গিত করে লিখেছে, বিগত ৩০ বছরে প্রথমবারের মত সীমান্তের বাইরে আইআরজিসি’র ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ‘শত্রুদের মুখে চপেটাঘাত করবো’ শীর্ষক মন্ত্রব্য তাঁর ওয়েব সাইটে প্রকাশের কয়েক ঘন্টা পর চালানো হয়।

আল-জাজিরা আরও লিখেছে, সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তবর্তী গাজীয়ান্তাব এলাকা থেকে আমাদের প্রতিবেদক জানিয়েছেন, এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইরানের এ হামলাকে দু’টি পৃথক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। প্রথমতঃ সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের পর এ হামলা চালানো হয়েছে –ইরান যাতে সামরিক পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছে- এবং দ্বিতীয়তঃ জিওপলিটিক্স দৃষ্টিকোণ থেকে; (এখন দেখার বিষয় হল) সৌদি আরব, আমেরিকা ও ইসরাইল এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব কিভাবে দেয়।

সিরিয়া অভ্যন্তরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংবাদ প্রকাশ করে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান লিখেছে: ইরাক ও সিরিয়া অভ্যন্তরে ইরান দায়েশের সাথে যুদ্ধ করলেও প্রথমবারের মত নিজের ভূখণ্ড থেকে সিরিয়ায় দায়েশের অবস্থানকে লক্ষ্য করে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এ হামলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে।

গার্ডিয়ান আরও লিখেছে: বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী –যা তেহরানে সন্ত্রাসী হামলার জন্য সৌদি আরবের নিন্দা জানিয়েছিল- গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছিল যে, ‘নিরাপরাধ মানুষের ঝরে পড়া রক্ত জবাবহীন থাকবে না’।

তেহরানে নিয়োজিত সিএনএন প্রতিবেদক জানিয়েছেন, সিরিয়ায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, সিরিয়া ইস্যুতে ইরানের ভূমিকা বৃদ্ধির বিষয়টিরই প্রমাণ।

রুশ বার্তা সংস্থা স্পুটনিকে’র ফার্সি সংস্করণে ‘থাপ্পড় খেল দায়েশ শব্দ শুনলো অন্যরা’ শিরোনামে উল্লেখ করা হয়েছে: তেহরানে দায়েশের হামলার জবাব ইরান বিভিন্নভাবেই দিতে পারতো। কিন্তু মধ্যম রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মাধ্যমে ঐ হামলার প্রতিশোধ নিয়ে মূলতঃ দায়েশের মিত্রদের জন্যও বার্তা ছুঁড়ে দিল ইরান। আর বিষয়টি বলার অবকাশ নেই যে, দায়েশকে কানমলা দেয়ার চাইতে অন্যদেরকে সতর্ক করার ছিল এ হামলার প্রধান লক্ষ্য।

স্পুটনিক ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরী ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতি ইঙ্গিত করে লিখেছে; ইরানের বিরুদ্ধে ইরাকের হামলার সময় কোন দেশই ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করতে রাজি না হওয়ায় ইরান নিজেই নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার কাজ শুরু করে এবং এক সময়ে তারা প্রতিরক্ষা বিষয়ে অপর দেশগুলো থেকে অমুখাপেক্ষী হয়ে যায়। বর্তমানে ইরানিরা বাগদাদে ক্ষেপণাস্ত্র প্রেরণের স্বপ্ন দেখে না বরং পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নির্বিঘ্নে বাগদাদের আকাশ অতিক্রম করে শত শত কিলোমিটার দূরে টার্গেটে আঘাত হানে।# ফার্সনিউজ

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

লন্ডনে হামলার জন্য দায়ী ব্রিটিশ ...
প্রতি বছর ইমাম হুসাইন(আ.)-এর ...
ইরানের রাষ্ট্রীয় শক্তি দেখে ...
জার্মানী’র হানুফার শহরে শোক ...
তৃতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের ...
২৮৮০ সালের ১৬ মার্চ গ্রহাণুর ...
ক্যান্সার দিবস : যে লক্ষণগুলো ...
শহীদ ইরানি জেনারেলের জানাযা ও ...
Tribunaux militaires égyptiens jugent 271 membres de FM
দিল্লি সফরে মমতার ভিন্ন রাজনৈতিক ...

 
user comment