মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী
হজ পালনের মাধ্যমে মানুষ কলুষতা থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পায়। হজরত আবু হোরাইরা বলেন, আমি নবী করিমকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করতে যাবে এবং সর্বপ্রকার অশোভনীয় ও গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকবে, হজ থেকে প্রত্যাবর্তনকালে ওই ব্যক্তির অবস্থা এমন হবে যে, তার সমস্ত গোনাহ মাফ হয়ে সে এরূপ বেগোনাহ হয়ে গেছে, যেরূপ বেগোনাহ মাতৃগর্ভ হতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিন ছিল। (বোখারি)
হজ পালিত হয় পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করে। আরব উপদ্বীপের মক্কা নগরীতে এ পবিত্র ঘর অবস্থিত। আল্লাহর কাছে মক্কার মর্যাদা অসীম। বোখারি শরিফের হাদিসে এ সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। মক্কা বিজয়ের দিন নবী করিম (সা.) তার ভাষণে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মক্কা এলাকাকে সপ্তম আকাশ ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি করার দিন থেকেই পবিত্র হেরেম শরিফ সাব্যস্ত করেছেন। অতএব, আল্লাহতায়ালার সেই সাব্যস্তকরণ অনুসারেই কেয়ামত পর্যন্ত তা পবিত্র হেরেম শরিফ হিসেবে অক্ষুণ্ন থাকবে। সে মতে এ এলাকায় আমার পূর্বেও যুদ্ধবিগ্রহ হালাল ছিল না, আমার পরেও কারও জন্য হালাল হবে না। একমাত্র আমার ক্ষেত্রে একদিনের অল্প সময়ের জন্য আল্লাহতায়ালার তরফ থেকে তা হালাল করা হয়েছিল। মক্কার কোনো গাছের একটি কাঁটা ভাঙাও নিষিদ্ধ, এ এলাকায় কোনো বন্যজন্তু তাড়া করাও নিষিদ্ধ এবং এখানকার পথে পাওয়া কোনো বস্তু মালিকের সন্ধান লাভের জন্য বিশেষরূপে ঢোল শহরত করার উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে উঠিয়ে নেওয়াও নিষিদ্ধ। মক্কার কোনো ঘাস, পাতা-লতা ছিন্ন করাও নিষিদ্ধ। তখন আব্বাস (রা.) বলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ (সা.) এজখের নামীয় ঘাস এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখুন। কারণ এ ঘাস আমাদের গৃহের জন্য এবং কর্মকারদের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয়। নবী করিম (সা.) বললেন, আচ্ছা এজখের ঘাস এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হলো। পবিত্র কাবাঘরে যারা হজ ও ওমরা পালন করতে যান তারা জমজমের পানি পান করার তাগিদ অনুভব করেন। আনুমানিক হিসেবে পাঁচ হাজার বছর আগে এ কূপের সৃষ্টি হয়।
লেখক : খতিব, আল-আমিন জামে মসজিদ, খুলনা।