আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা- : ইরানে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত গতকাল (সোমবার, ৪ জানুয়ারি ২০১৬) ইরানি পার্লামেন্টের স্পিকারের সাথে সাক্ষাত ও মতবিনিময় করেছেন।
স্পিকার ড. আলী লারিজানি এ সাক্ষাতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও ওমানের ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন : চলতি বছরগুলোতে উভয় দেশের সম্পর্ক গভীর হওয়ার পাশাপাশি পারস্পারিক সহযোগিতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইরান ও ওমান দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন : সাম্প্রতিক কালে দু’দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতাও লক্ষ্যণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ঘটমান ঘটনাসমূহের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন : দুঃখজনকভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে যে সকল পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে তা মুসলিম উম্মাহ’র বিপক্ষে এবং জায়নবাদীদের পক্ষে যাবে। সন্ত্রাসবাদের ইস্যুটি এখন বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে।
ইয়েমেনের জনগণের উপর সৌদিদের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন : এ বিষয়টির প্রতি সৌদি সরকারের কোন গুরুত্ব নেই যে, ইয়েমেনে হামলার পরিণতিতে এদেশে সন্ত্রাসবাদ প্রসার লাভ করবে। অন্যদিকে, প্রখ্যাত শিয়া আলেম শাইখ নিমর ও অপর ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদক্ষেপ মুসলমানদের মাঝে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। ইরানের জনগণও এতে অসন্তুষ্ট ও ক্ষুব্ধ।
ড. লারিজানি বলেন : নিশ্চিতভাবে একজন আলমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা স্বয়ং সৌদি সরকারেরও স্বার্থসিদ্ধ নয়। কোনভাবেই এ ধরনের পদক্ষেপের ব্যাখ্যা করা যায় না।
তিনি বলেন : গত দিনে সৌদি দূতাবাসের সামনে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে আমরা তার বিরোধী এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ড. লারিজানি বলেন : ইরানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে সৌদি পদক্ষেপ ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত ও ভুল নীতি। কোন একটি দল যদি অনাকাঙ্খিত কোন কাজ করে বসে তবে সেটা সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে একমাত্র যুক্তি হতে পারে না। কেননা গত কয়েক বছরে ইউরোপের কয়েকটি দেশে ইরানি দূতাবাসে হামলা হয়েছে, কিন্তু আমরা কখনই সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এ সাক্ষাতে ইরানে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত সাউদ বিন আহমাদ আল-বারওয়ানি ইরান ও ওমানের সম্পর্কে বহু বছরের প্রাচীন ও ভ্রাতৃত্ব সুলভ বলে আখ্যায়িত করে বলেন : বহু বছর আগ থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে এ দুই দেশের সম্পর্ক ছিল ইতিবাচক। আমরা আশাবাদী যে, এ দু’টি অঙ্গনে দু’দেশের সম্পর্কে আরো বৃদ্ধি পাবে।
গত এক বছরে ইরান ও ওমানের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন : সাম্প্রতিক কালে দুই দেশের চেম্বার অব কমার্সের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুব শীঘ্রই ওমানে ইরানি পণ্যের দু’টি প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বর্তমান অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করে ওমানের রাষ্ট্রদূত বলেন : বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট না বাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে শান্ত থাকতে হবে।
ইরানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে সৌদি সিদ্ধান্তকে ভুল বলে আখ্যায়িত করে ওমানের রাষ্ট্রদূত বলেন : নিশ্চিতভাবে বলা যায়, যে কারণেই তারা এ পদক্ষেপ নিয়ে থাকুক না কেনা এটা ছিল প্রজ্ঞাহীন এবং একটি ভুল পদক্ষেপ।
আল-বারওয়ানি বলেন : আমার দৃষ্টিতে সৌদি আরবের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ, ইরানের উপর চাপ বৃদ্ধি এবং ইরানের পরমাণু বিষয়ক সমঝোতার ইস্যুকে ধামাচাপা দিতে গ্রহণ করা হয়েছে।#
source : abna24