আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা):- ২০১৬-এর সর্বশেষ পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নটির উত্তর, হ্যাঁ-বোধক। মাত্র চার-বছর যেতে না যেতেই সিরিয়ার আলেপ্পো শহর আবার চলে এসেছে প্রেসিডেন্ট আসাদের কতৃত্বে। নিজ স্বার্থ সংরক্ষণ ও ইসরাইলের পথের-কাঁটা দূর করার লক্ষ্যে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদে’র বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র। অপর দিকে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদে’র পক্ষে সরাসরি পূর্ণ-সহযোগিতা দিতে থাকে রাশিয়া, ইরান, ও লেবানন (হিজবুল্লাহ)। আলেপ্পো ‘উদ্ধার’ যখন প্রায় চূড়ান্ত, সে মুহুর্তে মস্কোয় বৈঠকে মিলিত হয়েছেন রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সেই বৈঠকে আমেরিকার বিষয়কে কেয়ারই করা হয়নি। পাস কাটানো হয়েছে জাতিসংঘকেও। বৈঠকটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি রাশিয়া ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তারপরেও বৈঠক হয়েছে এবং এটা নিশ্চিত যে, প্রেসিডেন্ট আসাদের ক্ষমতাকে আরো মজবুত করতেই এই বৈঠক।
কিভাবে দৃশ্যপটগুলো এত দ্রুত বদলে যাচ্ছে? অপরাজেয় (!) মার্কিনীদের তল্পিবাহকরা কি ভাবে এত বড় ধাক্কা খেল এসব নিয়েই কিছু খণ্ডচিত্র তুলে ধরছি। খুব পিছিয়ে না গিয়ে, গত দু’দশকে মধ্যপ্রাচ্যে’র মুসলিম দেশগুলোর রাজনীতির দিকে তাকালে, এ অঞ্চলে আমেরিকার বিদ্বেষপূর্ণ ও দৈত-নীতির উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে জ্বলজ্বল করছে তা অনুমেয়। এ অঞ্চলের সব সঙ্কটের মূলে যে নামটি জড়িয়ে আছে সেটা হচ্ছে আমেরিকা। এমনকি বলা চলে আমেরিকার আগ্রাসী-পররাষ্ট্রনীতি এখন সঙ্কট জনক হয়ে উঠেছে। পাঁচ বছর আগে প্রেসিডেন্ট আসাদকে ক্ষমতাচ্যূত করার ডাক দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সেই পরিবর্তনের অংশ হিসাবে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেন। এখন তিনি নিজেই বিদায়ী, সাথে তার অনেক ক্ষমতাধর বন্ধুবরও!
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটিয়ে মূলতঃ ওবামা প্রশাসন চেয়েছিল ইসরাইল এর স্বার্থকে সংরক্ষণ করতে ও মুসলিম দেশগুলোর বিপুল সম্পদ অবৈধভাবে ভোগ-দখল অব্যহত রাখতে। শান্তির পথ বের করার নামে শিয়া-সুন্নি ইস্যুকে উস্কে দিয়ে ও পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী দেখিয়ে ঘোলা-পানিতে মাছ শিকারের নাটক দেখানোর আয়োজন করেছিল তারা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট আসাদকে ক্ষমতাচ্যূত করতে ব্যর্থ্য হওয়ায় মার্কিন প্রশাসনের সে গুড়ে বালি পড়ে। এটা মার্কিন কূটনীতির প্রকাশ্য পরাজয়ও বটে!!