বাঙ্গালী
Sunday 24th of November 2024
0
نفر 0

মহান আল্লাহ কেন সকল নবীকে এক বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানে প্রেরণ করেছেন ?

মহান আল্লাহ কেন সকল নবীকে এক বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানে প্রেরণ করেছেন ?

প্রশ্ন : যদি মহান আল্লাহর প্রজ্ঞার দাবি এটাই হয় যে,নবীগণের নবুয়্যতের মাধ্যমে সকল মানুষ হিদায়াত প্রাপ্ত হবে,তবে কেন তাদের সকলেই এক বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানে প্রেরিত হয়েছে এবং পৃথিবীর অন্যান্য স্থান এ অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে? বিশেষ করে প্রাচীনকালে যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সংবাদ আদান-প্রদানের মাত্রা ছিল খুবই সীমাবদ্ধ,ধীর গতির এবং সম্ভবতঃ এমন কোন জাতি বা গোষ্ঠী থাকতে পারে যারা নবীগণের আহ্বান সম্পর্কে কোনভাবেই অবগত ছিল না।

উত্তরঃ-

প্রথমতঃ নবীগণের আবির্ভাব কোন নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ ছিল না এবং পবিত্র কোরানের আয়াত থেকে আমরা এ প্রমাণ পাই যে,প্রতিটি গোত্র ও জাতির জন্যেই কোন না কোন নবী ছিলেন। যেমন :

)وَإِنْ مِنْ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٌ(

এবং এমন কোন সম্প্রদায় নেই যার নিকট সর্তককারী প্রেরিত হয়নি। (সূরাঃ ফাতির -২৪) অনুরূপ,

)وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ(

এবং আল্লাহর ইবাদত করার ও তাগুতকে বর্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্যে আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি। (সূরাঃ নাহল-৩৬)

পবিত্র কোরানে যদিও মুষ্টিমেয় কিছু নবীগণের (আ.) নাম উল্লেখ হয়েছে,তবে তার অর্থ এ নয় যে,নবীগণের সংখ্যাও তা-ই ছিল। বরং স্বয়ং পবিত্র কোরানেই সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে যে,এমন অনেক নবী ছিলেন যাদের নাম এ পবিত্র কিতাবে উল্লেখ হয়নি। যেমন :

)وَرُسُلًا لَمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ(

এবং অনেক রাসুল যাদের কথা তোমাকে বলিনি। (সূরা : নিসা ১৬৪)

দ্বিতীয়তঃ উল্লেখিতি প্রমাণটির দাবি ছিল এই যে,ইন্দ্রিয় ও বুদ্ধিবৃত্তি বহির্ভূত অপর কোন মাধ্যমও থাকা উচিৎ,যার মাধ্যমে মানুষ হিদায়াত প্রাপ্ত হবে। কিন্তু হিদায়াত প্রাপ্তি দু’টি শর্তে কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বাস্তবরূপ লাভ করে থাকে। একটি হল : ব্যক্তি স্বয়ং প্রভু কর্তৃক প্রদত্ত এ নিয়ামত বা অনুগ্রহ থেকে লাভবান হতে চাইবেন। অপরটি হল : অন্যরা এ হিদায়াতের পথে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। অধিকাংশ মানুষ স্বেচ্ছাচারিতার কারণে হিদায়াত প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন,তেমনি অপর সিংহভাগ আবার প্রচারের প্রসারে প্রতিবন্ধকতার ফলে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা জানি আল্লাহর প্রেরিত পূরুষগণ এ প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্যে সদা সচেষ্ট ছিলেন এবং আল্লাহর শক্রদের সাথে,বিশেষ করে শক্তিধর ও দাম্ভিকদের সাথে সংগ্রামরত ছিলেন। আর আল্লাহর বাণী প্রচার ও মানুষকে হিদায়াতের পথে নবীগণের মধ্যে অনেকেই নিজ জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করেছিলেন। কোন কোন ক্ষেত্রে যদি অনুসারী ও সহযোগী সংগ্রহ করতে পারতেন তবে অত্যাচারী ও স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতেও কুণ্ঠাবোধ করতেন না। আর এ অত্যাচারী ও স্বৈরাচারী শ্রেণীই হল দ্বীনের প্রসারের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক।

এখানে স্মরণযোগ্য যে,মানবীয় উৎকর্ষের পথ স্বাধীন নির্বাচনাধীন হওয়ার অপরিহার্য অর্থ হল : এ সকল ঘটনাগুলো এমনভাবে রূপ পরিগ্রহ করবে যে,সুপথ ও কুপথের নির্বাচনের ক্ষেত্রে সত্যপন্থী ও মিথ্যাপন্থীদের জন্যে উম্মুক্ত থাকবে। তবে স্বৈরাচারী ও মিথ্যাবাদীর প্রভাব যদি এমন স্থানে পৌঁছে যে,অপরের হিদায়াতের পথ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায় এবং কোন সমাজে সত্যের আলোকবর্তিকা সম্পূর্ণরূপে নির্বাপিত হয়ে যায় তবে ঐ অবস্থায় মহান আল্লাহ কোন না কোন অদৃশ্য উপায়ে ও অসাধারণ পথে সত্যের অনুসারীগণকে সাহায্য করে থাকেন।

যদি এ ধরনের কোন প্রতিবন্ধকতা নবীগণের (আ.) প্রচারের পথে না থাকত তবে তাদের আহ্বান সকল বিশ্ববাসীর কর্ণগোচর হত এবং ওহী ও নবুয়্যতের মাধ্যমে এ হিদায়াতের ঐশী অনুগ্রহ থেকে উপকৃত হত। অতএব অধিকাংশ মানুষের হিদায়াত প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অপরাধ তাদের উপরই বর্তায়,যারা নবীগণের আহ্বানের এবং প্রচার ও প্রসারের পথে বাধা সৃষ্টি করেছিল।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ফিলিস্তিন ও যায়নবাদ প্রসঙ্গ : ...
‘মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সা.)’ মুভি ...
শিশু নীরব হত্যা মামলার প্রধান ...
স্কুলে হিজাব পরায় মার্কিন মুসলিম ...
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ...
আয়াতুল্লাহ জাকজাকি বেঁচে আছেন ...
‘সর্বোচ্চ নেতার চিঠি ...
বিশ্বশক্তি চায় খণ্ড খণ্ড সিরিয়া
মদপানে শীর্ষে সৌদি আরব, ধূমপানে ...
শেইখ যাকযাকি’র মুক্তির দাবীতে ...

 
user comment