বাঙ্গালী
Sunday 24th of November 2024
0
نفر 0

কলম্বাসের ৫শ বছর আগে আমেরিকা আবিষ্কার করেন আবু রাইহান

বার্তা সংস্থা আবনা : সারা দুনিয়ার মানুষ এতদিন ধরে জেনে এসেছে স্প্যানিশ নাবিক কলম্বাসই আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকা। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত একটি নিবন্ধ ঐতিহাসিক এ সত্যে ফাটল ধরিয়ে দিল। গোলমাল পাকালো মানুষের এতদিনের বিশ্বাসে। নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, কলম্বাস নয়, কলম্বাসের ৫শ বছর আগেই আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলেন এক মুসলিম মনীষী। তার নাম আবু রাইহান আল-বিরুনী। নিবন্ধ বলছে, মুসলিম মনীষী আবিষ্কার করলেও পাদপ্রদীপের আলোয় আসে কলম্বাসের নাম। শনিবার তুর্কি গণমাধ্যম ওয়ার্ল্ড বুলেটিনে চাঞ্চল্যকর এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ইতিহাস লেখক এস ফ্রেডরিক স্টার তার আজকের ইতিহাস নিবন্ধে দাবি করেছেন, ১৪৯৮ সালের অনেক আগেই আমেরিকা আবিষ্কার করেন আবু রাইহান। নিবন্ধ অনুসারে ৯৭৩ সালে আজকের মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানে জন্ম তার। ওই ইতিহাস লেখকের মতে, আবু রাইহানই এশিয়া-ইউরোপসহ পৃথিবীর অজানা ভূমি আবিষ্কারের প্রথম পথপ্রদর্শক। আবু রাইহান স্বশরীরে আমেরিকা গেছেন কিনা সেটা স্পষ্ট করেননি নিবন্ধকার। তবে আমেরিকা যে আমেরিকার জায়গায় ছিল সেটার বাস্তবসম্মত ধারণা দেন এই মুসলিম ভূগোলবিদ। ১১ শতকে অজানা দেশ আবিষ্কারে নামা আবু রাইহান তার চোখ শুধু আমেরিকাতেই বেধে রাখেননি। ভূগোল বিশারদ এই মনীষী চোখ রেখেছিলেন পশ্চিম ইউরোপ থেকে শুরু করে পুরো আফ্রিকা, পূর্ব-এশিয়াসহ পৃথিবীর এক-পঞ্চমাংশের দিকে।

মধ্যপাচ্য, উত্তর-পশ্চিম ও ভারতসহ অনেক দেশের ভাষা জানতেন রাইহান। দক্ষ ছিলেন গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, খনিবিদ্যা, ভূগোল, মানচিত্রানংক বিদ্যা, জ্যামিতি ও ত্রিকোনোমিতিতে। আর এইসব ব্যাপারে তিনি বিখ্যাত মুসলিম মনীষী আহম্মেদ আল-ফারহানির মতোই দক্ষ ছিলেন বলে ওই নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে।

গ্রিক মনীষী ক্লডিয়াস টলেমি ও পিথাগোরাসের মতোই ভূগোল বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন আবু রাইহান। টলেমি-পিথাগোরাসের মতো রাইহানও ধারণা দিয়েছিলেন, পৃথিবী চারদিকে ঘোরে। রাইহানের শিক্ষক আল-ফারহানিও পৃথিবী চারদিকে ঘোরা তত্ত্বের কথা বলেছিলেন। অবাক করা ব্যাপার হল, যে ভিত্তির কথা উল্লেখ করে কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কারে তার নিজের মতের কথা বলেছিলেন, সেটা আল-ফারহানি ও আবু রাইহানের তত্ত্বের সঙ্গে প্রায় পুরোপুরি মিলে যায়। নিবন্ধকার লিখেছেন, কলম্বাস এটা হয়তো নোট করতে ভুলে গিয়েছিলেন, ভ্রমণের ক্ষেত্রে আল-ফারহানি রোমান মাইলসের পরিবর্তে আরব মাইলস ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি কলম্বাস কখনোই আমেরিকা আবিষ্কারের কথা চিন্তাও করেননি। জাহাজে উঠার পর প্রথমে কলম্বাস চিন্তা করেছিলেন, তিনি হয়তো এশিয়া কিংবা ইউরোপে গিয়ে উঠবেন। নিজের শিক্ষকের মতো আবু রাইহান পৃথিবীর ঘূর্ণনের ব্যাপারে যে তত্ত্ব দিয়েছিলেন তার আধুনিক তত্ত্বের সঙ্গে প্রায় সম্পূর্ণ মিলে যায়। নিজ কক্ষে চলার পথে সূর্য ও পৃথিবীর যে সম্পর্ক সে ব্যাপারে রাইহানের তত্ত্ব পুরোপুরি ঠিক।

পৃথিবী ঘূর্ণনের এই তত্ত্ব যখন দেন তখন আবু রাইহানের বয়স ৭০ বছর। শারীরিক কারণেই হয়তো তাকে স্বশরীরে আমেরিকায় নিতে পারেনি। কিন্তু মাপ-ঝোকের সবকিছুই করেছেন তিনি। তবে আরও অনেক তত্ত্ব বাকি আছে বলেও মনে করতেন রাইহান।

ফ্রেডরিক তার নিবন্ধে দাবি করেছেন আবু রাইহান আল-বিরুনীই পৃথিবীর প্রথম ব্যক্তি যিনি, নতুন পৃথিবী (নিউ ওয়ার্ল্ড) শব্দটার ধারণা দিয়েছেন। এস ফ্রেডরিক স্টার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তিনি একজন রাশিয়া-ইউরেশিয়া বিশেষজ্ঞ। এছাড়া সেন্টাল এশিয়া ককেশাস ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা। এ পর্যন্ত তিনি ২০টির বেশি বই লেখা ও সম্পাদনা করেছেন। আর নিবন্ধ লিখেছেন ২০০ ওপরে।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

কোরআনের ঐতিহাসিক অলৌকিকতা
শিয়া-সূন্নীর মধ্যে পার্থক্য কি?
ইসলামের দৃষ্টিতে কর্ম ও শ্রম (২য় ...
মানুষ তার কর্মের ব্যাপারে ...
শীয়া মাযহাবের উৎপত্তি ও ...
ঈদুল ফিতর: ইসলামী ঐক্য ও ...
আল কোরআনের অলৌকিকতাঃ পৃথিবী
Apakah manusia dalam perbuatannya memiliki pilihan? Bila benar, sejauh manakah batas ...
শিয়া-সুন্নি বিরোধ কেন? শিয়ারা কি ...
ধর্মে কোন জোর-জুলুম নেই

 
user comment