![আরবরা যখন দায়েশকে সুন্নি সংগঠন বলে প্রচার করছিল ইরান তখন আমাদের পাশে ছিল আরবরা যখন দায়েশকে সুন্নি সংগঠন বলে প্রচার করছিল ইরান তখন আমাদের পাশে ছিল](https://erfan.ir/system/assets/imgArticle/2018/01/120112_d35d7e410a83b00ff05b2c611830608b.jpg)
ইরাকের বিশিষ্ট সুন্নি আলেম, শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মাঝে বিভেদের একটি উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন: শিয়ারা হাতে গোনা কয়েকজন ইমামের নিষ্পাপ হওয়ার প্রতি আকিদা রাখে, কিন্তু আহলুস সুন্নাহ হাজার হাজার সাহাবীর নিষ্পাপ হওয়ার প্রতি বিশ্বাসী। তারা সাহাবাগণের নিষ্পাপ হওয়ার উর্ধ্বে উম্মতের ইজমাকেও ভুলের উর্ধ্বে বলে মনে করেন।
আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইরাকে নিযুক্ত ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি এবং ইরাকের শিয়া ও সুন্নিদের দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থার উদ্যোগে ‘মুলতাকি আল-ফিকরিল ইসলাম’ শীর্ষক সংস্থা গঠনের প্রাথমিক পদক্ষেপে আয়োজিত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে শিয়া ও সুন্নি আলেমরা বক্তব্য ও মতবিনিময় করেন।
ইরাকের আহলুস সুন্নাহ উলামা সোসাইটির চেয়ারম্যান শাইখ খালেদ আল-মোল্লা তার বক্তব্যে, দায়েশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও হাশদাশ শাবি গণবাহিনীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন: মারজা (শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় নেতা)-এর ফতওয়া ইরাককে বাঁচিয়ে দিয়েছে। যখন বাগদাদের একজন সুন্নি আলেম ইরাক পতনের জন্য দায়েশ সন্ত্রাসীদেরকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন তখন আয়াতুল্লাহ সিস্তান সন্ত্রাসী এ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জিহাদের ঐতিহাসিক ফতওয়া প্রদান করেন। যার ফলশ্রুতিতে ইরাককে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ইরাকের গণবাহিনী হাশদাশ শা’বির (মোবিলাইজেশন ফোর্স) সাথে ইরাকের বাহির ও ভেতর থেকে শত্রুতা পোষণ প্রসঙ্গ প্রখ্যাত এ সুন্নি আলেম বলেন: ‘হাশদাশ শা’বি, বন্ধু ও শত্রুদের তীর হজম করতে সক্ষম হয়েছে’।
শত্রুদের বিরুদ্ধে ইরাকের জনগণের প্রতি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সহযোগিতা প্রসঙ্গে শাইখ খালেদ আল-মোল্লা কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন: যখন আরব দেশগুলো দায়েশকে ‘সুন্নি বিপ্লবী’ গোষ্ঠী হিসেবে পরিচয় করাচ্ছিল, তখন এই ইরান আমাদের পাশে ছিল।
মুসলিম মাযহাবসমূহের নিকটবর্তী করণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন: কেউ কেউ বলতেন যে, ‘ঐক্য, ধর্ম বিনষ্ট হওয়ার কারণ হয়। কিন্তু সৌভাগ্যজনকভাবে আজ আমরা এমন স্থানে পৌঁছেছি যে, এতগুলো শিয়া ও সুন্নি সংস্থা ও সংগঠন সম্মিলিতভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
তিনি বলেন: শুধুমাত্র শিয়া ও সুন্নিদের মাঝে আকিদাগত পার্থক্য পরিলক্ষিত নয়। বরং শাফেয়ী ও হানাফীদের মাঝেও পার্থক্য রয়েছে। অতএব, সমস্যা পার্থক্যতে নয়, বরং সমস্যা হল যখন এ পার্থক্যগুলো ঝগড়া-বিবাদ ও রক্তপাতের কারণ হয়।
ইরাকের বিশিষ্ট সুন্নি এ আলেম শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মাঝে বিভেদের একটি উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন: শিয়ারা হাতে গোনা কয়েকজন ইমামের নিষ্পাপ (মাসুম) হওয়ার প্রতি আকিদা রাখে, কিন্তু আহলুস সুন্নাহ হাজার হাজার সাহাবীর নিষ্পাপ হওয়ার প্রতি বিশ্বাসী। তারা সাহাবাগণের নিষ্পাপ হওয়ার উর্ধ্বে উম্মতের ইজমাকেও ভুলের উর্ধ্বে বলে মনে করেন।
তিনি মুসলমানদের মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বলেন: আমি একজন সুন্নি মুসলমান। সিজদাগাহ’র (মহানবি (স.) এর অনুসরণ করতঃ মাটি, পাথর, কাঠ অথবা খেজুরের পাতার) উপর সিজদা করি না। কিন্তু শিয়ারা কারবালার যে মাটির উপর নামায আদায় করে, আমি সেটাতে চুমু খাই এবং সম্মান করি।
তিনি তার বক্তব্যের শেষে, তার ইরান সফরের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন: আমি ইরান সফরে এ বিষয়টি লক্ষ্য করেছি যে, ইরানে সুন্নি মাযহাবের অনুসারীরা তাদের মাদ্রাসা ও মসজিদগুলোতে পূর্ণ স্বাধীনতার সাথে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।
প্রসঙ্গত, উক্ত সম্মেলন ৫টি শিয়া সংস্থা ও ৭টি সুন্নি সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।#