আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা আবনার রিপোর্ট : মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রাক্তন শীর্ষস্থানীয় সদস্য কামাল আল-হালবাভি বলেছেন : গত ৩০শে জুনের ঘটনাকে কেউ কেউ সামরিক অভ্যূত্থান বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও প্রকৃত অর্থে তা সামরিক অভ্যূত্থান ছিল না বরং তা ছিল মুসলিম ব্রাদারহুডের বিপক্ষে জনগণের বিপ্লব।
তিনি বলেন : ৩০শে জুনের বিপ্লব মূলতঃ মুরসি সরকারের বিপক্ষে ছিল, যার পেছনে ছিল বিভিন্ন কারণ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে বিরোধীদের সাথে সমঝোতায় পৌঁছানো এবং দেশে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করণে মুরসি সরকারের ব্যর্থতা।
তিনি বলেন : রাবেয়াহ আল-আদভিয়াহ স্কয়ারে যে পদক্ষেপ ব্রাদারহুড নিয়েছে তা সত্যিকার অর্থে ব্রাদারহুডের সাথে সম্পৃক্ত যুব সমাজকে সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের দিকে নিয়ে যাবে। অথচ ব্রাদারহুডের উচিত ছিল শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে জনগণের মাঝে তাদের হারানো অবস্থান ফিরে পেতে সঠিক পথ অবলম্বন করা।
ইসলামপন্থীদের উচিত সংলাপে বসা
মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রাক্তন এ সদস্য বলেছেন : বিচক্ষণ ও বিজ্ঞ ইসলামপন্থীদের উচিত মিশরের স্বার্থে পদক্ষেপ নেওয়া এবং সংলাপে বসা, যাতে দেশের জনগণের বিভিন্ন দলে বিভক্ত হওয়া এবং সহিংসতার পথরোধ করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন : আমি জাতির সমর্থনে –যাদের পাশে দেশের সামরিক বাহিনীও এসে দাঁড়িয়েছে- ৩০শে জুনের বিপ্লবে আত-তাহরির-এ অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছি।
আল-হালবাভি বলেন : সামরিক বাহিনী ২৫শে জানুয়ারীর গণবিপ্লবেও জনগণের পাশে ছিল, কিন্তু আশ্চার্য্যের বিষয় হচ্ছে ইসলামপন্থীরা এবার সামরিক বাহিনী কর্তৃক জনগণকে সমর্থনের নিন্দা জানিয়েছে অথচ তারা ২৫শে জানুয়ারীর গণবিপ্লবে সামরিক বাহিনী’র সহায়তাকে স্বাগত জানিয়েছিল, ইসলামপন্থীদের এমন অবস্থান গ্রহণের কারণ কি?
বৈদেশিকদের নিকট ব্রাদারহুডের সহযোগিতার আহবান পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করে তুলবে
ব্রাদারহুড কর্তৃক বহির্বিশ্বের বিশেষতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সহযোগিতার আহবানের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন : সাদ্দামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর হতে পারস্য উপসাগরীয় দেশসমূহে যে সকল ঘাঁটি তৈরী করেছিল তারা সেগুলোকেও এখনো জড়ো করতে পারেনি। অতএব, বৈদেশিকদের নিকট সহযোগিতার আহবান মিশর জাতিকে দলে দলে বিভক্ত করে দেবে আর এটাই হচ্ছে ষড়যন্ত্রের সেই নীল স্বপ্ন যা বিদেশীরা মিশরের জন্য দেখেছে।
কেন আমরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছি না
ধর্মের নামে জিহাদের আহবান -চাই তা মিশরে যারা ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে বিপ্লব করেছে তাদের বিরুদ্ধে হোক অথবা সিরিয়ায় হোক- এর নিন্দা জানিয়ে আল-হালবাভি বলেছেন : আমরা নিজেদের জন্য এমন কাউকে শত্রু বানিয়েছি যারা প্রকৃত অর্থে আমাদের শত্রু নয় এবং আমাদের প্রকৃত শত্রুর বিষয়ে আমরা অবহেলা করছি। অথচ এমন প্রশ্ন করা উচিত যে, কেন আমরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবো না অথবা কেন আমরা পারস্য উপসাগরীয় দেশসমূহে বিদ্যমান মার্কিন ঘাঁটির বিরুদ্ধে জিহাদ করি না।
মুসলিম ব্রাদারহুডের এ সদস্য আরো বলেছেন : সঠিকভাবে সকলের জন্য আইন বাস্তবায়িত হবে এমনকি প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও। যে ব্যক্তি যে পদেই থাকুক না কেন দোষী সাব্যস্ত হলে তার প্রাপ্য শাস্তি তাকে প্রদান করতে হবে এমনকি যদি তার জন্য মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিও ধার্য্য হয়।