আবনা ডেস্কঃ সকালের নাশতার টেবিলে বিফ কাটলেট। সকাল গড়াতেই মধ্যাহ্নভোজনে বিফ বিরিয়ানি থেকে শুরু করে গোমাংসের একাধিক রকমারি ডিস। না, খাদ্যের এ মেনু হায়দরাবাদের নবাবি কোনো অনুষ্ঠানের নয়। এ হল কেরালা বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের খাদ্য তালিকা।
গরু জবাই বন্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে বৃহস্পতিবার কেরল বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। সেখানেই এ খাদ্যতালিকা রাখা হয়েছিল। এটা চেটেপুটে খেলেন একাধিক বাম বিধায়ক।
সম্প্রতি গরু জবাই বন্ধ করতে একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিজেপি সরকার। গরু, মহিষসহ একাধিক গবাদিপশুর চামড়া বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। একই সঙ্গে কেন্দ্রের ওই নির্দেশিকায় বলা হয় ঠিক কী কারণে গরু কেনাবেচা হচ্ছে, তা স্পষ্ট করে জানাতে হবে। এমনকি কৃষিকাজের জন্য কেনা গবাদিপশু যে অন্যকোনো কাজে ব্যবহার করা হবে না, সে প্রসঙ্গে মুচলেকা দিতেও বলা হয়।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের এ নির্দেশের বিরোধিতা প্রথম থেকেই করে এসেছে কেরালা সরকার। তামিলনাড়ুসহ দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোও এ নির্দেশিকার বিরোধিতায় সরব হয়। একই মত জানায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোও।
তবে মুখে বললেও বাস্তবে সংসদীয় গণতন্ত্রে কেন্দ্রের নির্দেশ কোনো রাজ্য অস্বীকার করতে পারে না। এখন কেন্দ্রের এ নির্দেশ কোন পদ্ধতিতে মানা হবে না, সেই পথ খুঁজতেই বৃহস্পতিবার বিশেষ অধিবেশনে বসে কেরালা। আর সেখানেই গো-মাংস খাওয়ার নজির গড়লেন বাম বিধায়কেরা।
২০১৭ সালে কেরালায় ক্ষমতায় আসে সিপিআই ও সিপিএমের যুক্তফ্রন্ট। এ রাজ্যে কংগ্রেস মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও কেরালা সরকারের এ দিনের কর্মসূচি নিয়ে তেমনভাবে বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি তাদের কোনো বিধায়ককে।
এ দিন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পীনরাই বিজয়ন বলেন, নরেন্দ্র মোদি নিজের মতো একটা নিয়ম বানালেই যে তা মেনে নিতে হবে, এর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কেন্দ্রের এ চাপিয়ে দেয়া নীতির বিরুদ্ধে এ দিন প্রায় সব বিধায়কই একমত হয়েছেন বলেও জানান বিজয়ন।
ভারতে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে যখন গো-মাংস পুরোপুরি নিষিদ্ধ, ঠিক তখনই পশ্চিমবঙ্গে বামনেতারা ও বুদ্ধিজীবীদের একটা অংশ প্রকাশ্যে গো-মাংস খেয়ে তার বিরোধিতায় সরব হয়।